গত জুলাই মাসে সারাদেশে ৬৩২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭৩৯ জন নিহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২ হাজার ৪২ জন। আর এসব দুর্ঘটনার মধ্যে ২৯৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে, এতে নিহত হয়েছেন ২৫১ জন।
শনিবার (৬ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রেড সেফটি ফাউন্ডেশন। দেশের শীর্ষ ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ১০৫ জন নারী ও ১০৯টি শিশুও রয়েছে। এদের মধ্যে ১১৮ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ১৩৭ জন।
একই সময়ে ১৪টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত এবং সাত জন নিখোঁজ রয়েছেন। ২৬টি রেলপথ দুর্ঘটনায় (রেলক্রসিং দুর্ঘটনাসহ) ৪১ জন নিহত এবং ৩৩ জন আহত হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২৫২টি জাতীয় মহাসড়কে, ১৯৯টি আঞ্চলিক সড়কে, ১০৯টি গ্রামীণ সড়কে এবং ৬৪টি শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৮টি সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনাগুলোর ১৪৫টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৫৭টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১২৭টি পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দেওয়া, যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১৭টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ১ হাজার ২১৮টি। এরমধ্যে ট্রাক ১৭৯টি, বাস ১৮৮টি, কাভার্ডভ্যান ২১টি, পিকআপ ৫৬টি, প্রিজনভ্যান একটি, ট্রলি ৯টি, লরি পাঁচটি, ট্রাক্টর ১৪টি, তেলবাহী ট্যাংকার ও ট্যাংক লরি আটটি এবং ১০ চাকার লরি রয়েছে একটি।
এছাড়াও সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ট্রাক দুইটি, রেকার একটি, ড্রাম ট্রাক ১৪টি, মাইক্রোবাস ২৪টি, প্রাইভেটকার ২৩টি, অ্যাম্বুলেন্স তিনটি, জিপ একটি, মোটরসাইকেল ৩১৭টি, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা-মিশুক) ২২১টি, স্থানীয়ভাবে তৈরি (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-চান্দেরগাড়ি-আলগানন-টমটম-মাহিন্দ্র-ডাম্পার-পাওয়াটিলার) যানবাহন ৮২টি, বাইসাইকেল ১৪টি, প্যাডেল রিকশা ২২টি এবং প্যাডেল ভ্যান ১২টি।
দুর্ঘটনা রোধে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে সংগঠনটি। তারা বলছে, দুর্ঘটনা রোধে দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; পরিবহনের মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্ব রাস্তা (সার্ভিস রোড) তৈরি করতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে।’
এছাড়াও গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ; রেল ও নৌ-পথ সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে সড়ক পথের উপর চাপ কমাতে হবে; টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে; “সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮” বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে বলেও দাবি জানানো হয়েছে।