বিনা অপরাধে পশুদের শাস্তি দেওয়ার অন্যতম মাধ্যম চিড়িয়াখানা। সভ্য দেশে, সভ্য সমাজে এমন নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতা চলতে পারে না। ফলে এই ব্যবস্থার বিলুপ্তি চেয়ে প্লাকার্ড হাতে একাই অনশন করেন সৌরভ নামে এক যুবক।
রবিবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানার সামনে “চিড়িয়াখানা নামের টর্চার সেল চাই না অবিলম্বে বন্ধ করুন” প্ল্যাকার্ড হাতে এই কর্মসূচি পালন করেন তিনি।
সৌরভ জানান, ২০০০ সালের দিকে তিনি যখন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তখন বন্ধুদের সঙ্গে দিনাজপুর থেকে রংপুর চিড়িয়াখানায় গিয়েছিলেন। সে সময় তার মনে হয়েছিল এটি একটি অমানবিক ব্যবস্থাপনা। সেই অনুভূতি তাকে তাড়িত করে বেড়ায়। তাই তিনি এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন।
ছোটবেলার স্মৃতি হাতড়িয়ে তিনি বলেন, “যখন রংপুর চিড়িয়াখানায় ঢুকলাম প্রথমে কিছু বানর ও পাখি দেখতে পেলাম। তারপর খাঁচাবন্দি একটি ভালুক দেখতে পাই। নোংরা ও বদ্ধ জলায় ভালুকটি পড়ে আছে। প্রাণীটির শরীর থেকে দুর্গন্ধ আসছিল। দর্শনার্থীরা ভালুকটির দিকে পাথর ছুঁড়ে আনন্দ পাচ্ছিল। আমার ভীষণ খারাপ লাগলেও সেটি প্রকাশ করতে পারিনি।
চারুকলার ছাত্র সৌরভ বলেন, “বোঝাপড়ার বয়স হওয়ার পর বেশ কয়েকবার চিড়িয়াখানায় যাওয়া হয়েছে। প্রাণীর ছবি আঁকার জন্য একাডেমিক কাজের সূত্রেই যাওয়া হতো। তখন ভাবলাম, চিড়িয়াখানা কী করে মানুষের বিনোদনের জায়গা হয়? বা মাধ্যম হয়। আর যদি প্রাণীদের দেখে শেখার চিন্তা থেকেও কেউ চিড়িয়াখানা করার পক্ষে কথা বলেন তাহলে বলব, এটি অবশ্যই ভুল ধারণা। কারণ, চিড়িয়াখানায় একটা প্রাণী সম্পর্কে সঠিক ধারণা কখনো পাওয়া সম্ভব না “
দেশের চিড়িয়াখানাযগুলোতে প্রাণীদের বসবাসের উপযোগী পরিবেশ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, “চিড়িয়াখানায় গেলে প্রায়ই দেখা যায় কোনো না কোনো প্রাণী অসুস্থ। সঠিক ব্যবস্থাপনা নেই। আরও অনেক সমস্যা রয়েছে। আমি আমার বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। আমি চাই অবিলম্বে এই ব্যবস্থা বন্ধ হোক।”
সভ্য দেশেগুলোতে চিড়িয়াখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশও একটি সভ্য দেশ। আমি আশা করি, এশিয়ার অন্যতম সভ্য দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার চিড়িয়াখানা বন্ধে পদক্ষেপ নেবে।”