নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল বাজারে বেসরকারী ক্লিনিক, ও-আর-খান মেমোরিয়াল হাসপাতালে সোমবার রাতে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বড়াইগ্রাম ইউনিয়নের প্রতাবপুর গ্রামের আলমগীর হোসেনের স্ত্রী মোছা.আছিয়া বেগমের সিজারিয়ানের সময় নবজাতকের মৃত্যু ঘটে।
এ ব্যাপারে প্রসূতি আছিয়ার স্বামী আলমগীর অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার স্ত্রীর পেটের ব্যথা উঠলে জোনাইল বাজারে ও-আর-খান মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ডাক্তাররা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই তাড়াহুড়া করে অনুমতি ছাড়াই ওটিতে নিয়ে যায়। বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আর.এম.ও ডাঃ ডলি রানী সিজারিয়ান অপারেশন করেন।
ওটি থেকে বেরিয়ে জানান, ‘পেটের ভেতর শিশুটি ২দিন আগেই মারা গেছে।’ একথা শুনে আমরা সবাই শিশুটিকে দেখতে চাইলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সেরা শিশুটিকে দেখতে দেয়নি। প্রসুতির স্বামী আরো জানান, ১৫ দিন আগে আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে ডাঃ ডলি রানীর কাছে আসলে প্রসুতির পরীক্ষা করে ২ সপ্তাহ পরে স্ত্রীকে নিয়ে আসার পরামর্শ দেন।
শিশুটি সুস্থ্য আছে। পরামর্শক্রমে গত সোমবার বিকেলে হাসপাতালে নিয়ে আসলে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার মোছাঃ ফাইজুন নাহার (দৃষ্টি) সহ নার্সেরা তাকে ভর্তি করে নেয়। কিছুক্ষণ পর ডাঃ ডলি রানী এসে অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই সিজারিয়ান অপারেশন শেষে ডাঃ বাহিরে এসে আমাকে জানান, নবজাতক শিশুটি ২ দিন আগেই পেটে মারা গেছে।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. তোজাম্মেল জানান, ‘একটি প্রসুতি মায়ের সিজারিয়ানের আগে তার পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হয়। কিন্তু হাসপাতাল কতৃপক্ষ ও ডাঃ ডলি রানীর খামখিয়ালীপনায় নবজাতকের মৃত্যু হতে গারে বরে মনে হচ্ছে।’
এবিষয়ে ডাঃ ডলি রানী বলেন, ‘রোগীটি যখন হাসপাতালে আসে তখন নার্সরা আমাকে মোবাইল ফোনে জানায় প্রসুতির পেটে বাচ্ছা পায়খানা করে ফেলছে। তখন আমি বলি তাড়াতাড়ি রোগীকে ওটিতে নিয়ে গিয়ে রেডি করো। দ্রুত পেট থেকে বাচ্চা বের করতে হবে। এদিকে পেসেন্টের হাইপ্রেসারও বেশী।
হাসপাতালের ডাক্তাররা ওটি রেডি করে আমাকে বললে, আমি সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে সিজার করে বাচ্চা বের করে দেখি বাচ্ছাটি মৃত। পরে নার্স ও ডাক্তারদেরকে জিঙ্গাসা করি রোগীর গার্জেনকে জানিয়েছ কিনা বাচ্চার অবস্থা খারাপ হতে পারে। সেই মূহুর্তে আমার কিছু করার ছিল না। আমি ইচ্ছা করলেই ওটি থেকে নামিয়ে পেসেন্টকে পরীক্ষা করতে পারি না।’
গণমাধ্যম কর্মীরা খবর পেয়ে হাসপাতালে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে হাসপাতালের কতৃপক্ষ শহীদুল ইসলামসহ কয়েকজন কর্মচারী গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে দুর্ব্যবহার করে।
এলাকাবাসী অনেকেই জানান, ডাক্তার ডলি রানীর বিরুদ্ধে আগেও শিশুসহ প্রসুতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সিদ্দিক জানান, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।