পাঁচ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ফাইজারের করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের প্রথম চালান ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য পরিষেবা অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ডিপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক।
শনিবার (৩০ জুলাই) সকালে ঢাকায় এসে পৌছায় শিশুদের জন্য করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের প্রথম চালান।
ডা. শামসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “বিশেষভাবে পাঁচ থেকে ১১ বছরের শিশুদের জন্য তৈরি মোট ১৫ লাখ ২ হাজার ৪০০ ডোজ ভ্যাকসিন আজ সকালে দেশে এসে পৌঁছেছে। আমরা পর্যায়ক্রমে ভ্যাকসিনের প্রায় ৪০ মিলিয়ন ডোজ পাবো।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) সূত্রে জানা গেছে, ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের স্কুলগুলোতে কেন্দ্র করে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। পাঁচ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদেরকেও স্কুলে কেন্দ্র করে ফাইজারের এই বিশেষ টিকা দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, দেশে পাঁচ থেকে ১১ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার বিষয়ে গত ২৮ জুলাই এক আদেশ জারি করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। আদেশে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্নের জন্য শর্ত পূরণ ও নির্দেশনা পালন করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের কোভিড টিকা দেওয়া সংক্রান্ত শর্ত ও নির্দেশনা
১। শিক্ষার্থীদের বয়সসীমা হবে ৫ বছর থেকে ১১ বছর (১১ বছর ৩৬৪ দিন);
২। শিক্ষার্থীদের টিকা গ্রহণ করতে হলে অবশ্যই সুরক্ষা অ্যাপ/সুরক্ষা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিবন্ধিত হতে হবে;
৩। শিক্ষার্থীদের জন্ম নিবন্ধন নম্বর অবশ্যই ১৭ ডিজিটের হতে হবে;
৪। যে সকল শিক্ষার্থীর ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর নেই তাদের অবশ্যই ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন করিয়ে নিতে হবে; সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান ও অভিভাবকদেরকে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে:
৫। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য সুরক্ষা অ্যাপ/সুরক্ষা ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক নয়;
৬। বিদেশি পাসপোর্টধারী শিক্ষার্থীরা সুরক্ষা অ্যাপ/সুরক্ষা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিবন্ধিত হওয়ার পূর্বে স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নির্ধারিত “এক্সেল ছকে” নির্ধারিত ফরম্যাটে student.dshe.vaccination@gmail.com ঠিকানায় তথ্য প্রেরণ করবে;
৭। প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীকে টিকা প্রদানের লক্ষ্যে তালিকা এমনভাবে প্রণয়ন করবে যাতে কোনও শিক্ষার্থী বাদ না পড়ে;
৮। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় প্রচারণা ও সংশ্লিষ্ট অভিভাবকদেরকে নিয়মিত এ কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করবে;
৯। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান সুশৃঙ্খলভাবে টিকাদান কার্যক্রম সম্পন্নে প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্কাউট/গার্ল গাইডস/রোভার স্কাউট/গার্ল ইন রোভার/রেডক্রিসেন্ট/বিএনসিসি সদস্যদের স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে নিয়োজিত করবে। যেসব প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের দল নেই সেগুলোতে নিজস্ব শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করে কার্যক্রম পরিচালনা করবে:১০। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান টিকাদান কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষককে দায়িত্ব প্রদান করবে;
১১। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী নির্ধারিত সংখ্যক শিক্ষার্থীকে ভ্যাকসিন কেন্দ্রে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে;
১২। টিকাদান কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নির্দেশনা বা পরামর্শের জন্য সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক পরিচালক /উপপরিচালক/জেলা শিক্ষা/উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দফতরে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা যোগাযোগ রক্ষা করবেন।