অবশেষে বরফ গললো। খাদ্যশস্য রপ্তানি নিয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার প্রতিনিধিরা। গত বেশ কিছুদিন ধরে তুরস্কের মধ্যস্থতায় তাদের বৈঠক চলছিল। কিন্তু কোনোপক্ষই সমাধানসূত্রে পৌঁছাতে পারছিল না। শেষপর্যন্ত তারা সহমত হয়েছে। এর ফলে ইউক্রেনে আটকে থাকা প্রায় ২০ মিলিয়ন টন খাদ্যশস্য আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পৌঁছে দেওয়া যাবে।
জাতিসংঘ এবং তুরস্ক এই বৈঠকে মধ্যস্থতার ভূমিকা নিয়েছিল। সেজন্যই চুক্তি সই হওয়ার আগে তড়িঘড়ি তুরস্কে যাচ্ছেন জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ানও চুক্তিতে সই করবেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে ভলোদিমির জেলেনস্কির দেশ দাবি করে, রাশিয়া কৃষ্ণসাগরে অবরোধ করে রেখেছে। ফলে বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য ইউক্রেনের বন্দরে আটকে পড়েছে। তা রপ্তানি করা যাচ্ছে না।
রাশিয়া পাল্টা জানায়, ইউক্রেন কৃষ্ণসাগরে মাইন ছড়িয়ে রেখেছে। সেজন্যই ওই পথে তারা কোনো জাহাজ যেতে দিচ্ছে না। গত কয়েকমাস ধরে এ নিয়ে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে, কিন্তু কোনো সমাধানসূত্র মেলেনি।
অন্যদিকে, খাদ্যশস্যের অভাবে আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে খাদ্যসংকট শুরু হয়েছে। অবশেষে সেই সংকট কিছুটা কাটবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মার্কিন গোয়েন্দাসংস্থা সিআইএ দাবি করেছে, ইউক্রেন যুদ্ধে অন্তত ১৫ হাজার রাশিয়ার সেনার মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা এর প্রায় তিনগুণ। সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নস সম্প্রতি এক বৈঠকে এই তথ্য দিয়েছেন। তার বক্তব্য, রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর আগে কল্পনাও করতে পারেনি যে, তাদের এই পরিমাণ ক্ষতি হবে। তার বক্তব্য, রাশিয়ার আহত সেনার সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার।
ইউক্রেনেরও প্রচুর সেনার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। কিন্তু রাশিয়া এবং ইউক্রেন কোনোপক্ষই তাদের ক্ষতির সংখ্যা এখনো পর্যন্ত প্রকাশ করেনি। বস্তুত, যুদ্ধ শুরুর কয়েকদিন পর দুই দেশ তাদের নিহত সেনার সংখ্যা জানালেও গত কয়েকমাসে তারা আর কোনো সংখ্যা বলেনি। সিআইএ প্রধানের এই দাবি নিয়েও দুই দেশ কোনো মন্তব্য করেনি।
গ্যাস সরবরাহ নিয়ে আলোচনা করতে মস্কোয় পৌঁছেছেন হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। হাঙ্গেরির এনার্জি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন।
সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়ার থেকে অতিরিক্ত ৭০০ মিলিয়ন কিউবিক মিটার প্রাকৃতিক গ্যাস কেনার পরিকল্পনা আছে তাদের। এছাড়া রাশিয়া হাঙ্গেরিকে যে পরিমাণ গ্যাস দেয়, তার সরবরাহ যাতে ঠিক থাকে, তা নিয়েও আলোচনা করবেন তিনি।