সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে হেফাজত ইসলামের নেতা মামুনুল হকের কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান আব্দুর রহমানের ভিডিও বার্তা।
জানা গেছে, আব্দুর রহমান (১৭) জান্নাত আরা ঝর্ণা ও শহীদুল ইসলামের প্রথম সন্তান। তাদের তামীম নামে আরও একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
তিন মিনিটের এই ভিডিও বার্তায় আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমি তো অলরেডি বোর হয়ে গেছি। অনেক কিছু শিখছি, জানছি। আমার ভেতরে একটা ম্যাচুওরিটি ভাব আইছে। আমি কিছুটা সহ্য করে নিতে পারি। কিন্তু আমার তো একটা ছোট ভাই আছে, তের/চৌদ্দ বছর বয়স। কেবল উঠতি বয়স। এই সময়ে মানুষের কত কথা শোনা লাগতেছে। সমাজের সামনে সে মুখ দেখাইতে পারতেছে না। আমার ছোট ভাই রাতে, মানে যখন ঘটনাটা ঘটলো, সে সারারাত ঘুমায় নাই। ও (তামীম) পুরোপুরি মেন্টালি শক, মনে হয় শকড খাইছে। আমি বাসা থেকে বের হয়ে গেছি। বাসায় থাকলে কি উলটা পালটা করবো আমি নিজেও জানি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ এটা আমার বাবার কর্মের ফল। আমার বাবা মানুষকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে। পাগলের মতো ভালবাসে ঐ লোকটাকে। ঐ লোকটার (মামুনুক হক) মোল্লার হাটে একটা মাহফিল ছিল। সেখানে পুলিশ তাকে (মামুনুল) মাহফিল করতে দেবে না, তখন সে একটা জায়গায় লুকাইছে। সেটা আমার বাবা দেখে অনেক কান্নাকাটি করছে। কিন্তু তার আগেই আমি জানছি আমার মায়ের সাথে তার সম্পর্ক আছে। আমি তখন হাসতে ছিলাম। এই লোকটা (বাবা) পাগলের মতো কানতেছে ওঁই লোকটার (মামুনুল) জন্য, যে তার সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘একবার মামুনুল হক গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তখন আমার বাবা থানার ওসি কামরুজ্জামাকে বলেছিল, তুমি আমাকে আটকে রেখে ঐ লোকটাকে(মামুনুল) ছেড়ে দাও। কতটা ভালবাসলে মানুষ এই কথাটা বলতে পারে! আর সেই লোকটা (মামুনুল) এইভাবে গাদ্দারী করলো!
আরও আগের ঘটনা, যখন ডিভোর্স হয়নি, আমি সেসময় ছোট এবং আমার ছোট ভাই তখন আরও ছোট শিশু ছিল। সে সময়কার কথা। আমার বাবা একদিন বাসায় ছিলেন না। আমার মা ছোট ভাইকে স্তন্যপান করাছিলেন, তিনি (মামুনুল) আমাদের বাসায় আসেন এবং আমার মায়ের রুমে হুট করে ঢুকে পড়ে তাকে কুপ্রস্তাব দেয়। আমার মা তার কুপ্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং বলেছিল, না, এটা কোনদিন সম্ভব না। আপনি তো ঠকাচ্ছেন। আপনার কাছের বন্ধুকে, কাছের মানুষটাকে। সে তখন ফিরে এসেছিল। তখন তার মনের মধ্যে একটা কামভাব ঢুকে গেছে। সে (মামুনুল) লোভ সামলাইতে পারতেছিল না। সে একটা সুযোগ খুঁজতে ছিল। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে, সে এটা বুঝতে পারে নাই। যখনই সে(মামুনুল) সুযোগ পাইছে তখনই সে স্বামী/স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব বাড়াইয়া দিছে। কোন বিষয়ে স্বামী/স্ত্রীর মধ্যে তো ঝগড়া হবেই, সে (মামুনুল) তখন নক করছে এবং দুইজনের মধ্যে আরও দূরত্ব বাড়াইয়া দিছে। এভাবেই সে (মামুনুল) একটা পরিবারের খুশী, ভালবাসা, পরিবারে মিলমিশ, সম্পর্ক পুরোপুরি সে ধ্বংস করে দিছে। আরও যে কত পরিবারের কত মানুষের ভালবাসা যে সে (মামুনুল) ধ্বংস করছে, এর কোন ঠিক নেই।
তিনি আরও বলেন, আমি বাংলাদেশের মানুষের কাছে আশা করবো এর(মামুনুলের) যেন সঠিক বিচার হয়। আপনারা কারও অন্ধ ভক্ত হইয়েন না। কাউকে অন্ধভাবে বিশ্বাস কইরেন না। কেননা সবারই মুখোশের আড়ালে একটা চেহারা থাকে। এই লোকটা(মামুনুল) আলেম নামধারী, একটা মুখোশধারী জানোয়ার। এর মধ্যে কোন মনুষ্যত্ব নেই। সবসময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকে, কাকে কিভাবে দুর্বল করা যায়! আমার আর কিছু বলার মতো ভাষা নাই।
উল্লেখ্য, নারায়নগঞ্জের একটি রিসোর্টে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের সঙ্গে জান্নাত আরা ঝর্ণা অপ্রীতিকর ঘটনার গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ঝর্ণার দুই পুত্র মুষড়ে পড়েন। এরপরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ঝর্ণার প্রথম পুত্র আব্দুর রহমান তার মা (মামুনুলের কথিত স্ত্রী)র সঙ্গে ফোনালাপের একটি অডিও ভাইরাল হয়েছে। সেই অডিওতে মা ও ছেলের মধ্যে কথোপকথন থেকে জানা গেছে, বর্তমানে জান্নাত আরা ঝর্ণার ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন। এ সময় ছেলে মামুনুল হকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে মা’ বলেন, ‘তার (মামুনুল) জন্য অত দরদ দেখাইও না। সে কিন্তু খুলনার দিকে আসলে প্রচণ্ড মাইর খাবে। আমি মিডিয়ার সামনে বলবো উনি যে তোমাকে বিয়ে করছে আগের পরিবারকে জানাইছে? কেমনে সে (মামুনুল) বন্ধুর স্ত্রীকে বিয়ে করলো?
মামুনুলের কথিত স্ত্রী জান্নার আরা ঝর্নার পুত্র আব্দুর রহমানের ভিডিও বার্তা