এ বছরই বিশ্বের জনসংখ্যা ৮০০ কোটি ছাড়াবে, আর ২০৩০ সালে বিশ্বে জনসংখ্যা ৮৫০ কোটি এবং ২১০০ সালে ১ হাজার ৪০ কোটিতে পৌঁছাতে পারে।
গতকাল সোমবার (১২ জুলাই) জাতিসংঘ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ২০২৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে চীনকে ছাড়িয়ে যাবে ভারত। বর্তমানে এই দুই দেশে পৃথকভাবে ১৪০ কোটিরও বেশি করে জনসংখ্যা রয়েছে। অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ার উভয় দেশে বর্তমানে ২৮০ কোটির বেশি মানুষের বসবাস।
জনসংখ্যাবিষয়ক জাতিসংঘের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ১৯৫০ সালের পর বর্তমানে বিশ্বের জনসংখ্যা সবচেয়ে ধীরগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত বছর বিশ্বজুড়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ শতাংশেরও নিচে নেমে গেছে।
ভারতের আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে দেশটির জনসংখ্যা ছিল ১২১ কোটি। দেশটিতে প্রতি এক দশকে মাত্র একবার এই আদমশুমারি পরিচালনা করা হয়। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে দেশটির সরকার ২০২১ সালের আদমশুমারি পিছিয়ে দিয়েছে।
২০২১ সালে বিশ্বে একজন নারীর সন্তান জন্মদানের গড় হার ২ দশমিক ৩ জনে দাঁড়িয়েছে; যা ১৯৫০ সালের প্রায় ৫ শতাংশের অর্ধেকেরও কম। বিশ্বজুড়ে প্রত্যেক নারীর সন্তান জন্মদানের এই হার আরও হ্রাস পেয়ে ২ দশমিক ১ শতাংশে নামতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ADVERTISEMENT
dt-ad
এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেছেন, এটি আমাদের বৈচিত্র্যতার উদযাপন, আমাদের সাধারণ মানবতার স্বীকৃতি ও স্বাস্থ্যসেবার অগ্রগতিতে বিস্মিত হওয়ার এক উপলক্ষ; যা মানুষের আয়ু বৃদ্ধি করেছে এবং নাটকীয়ভাবে মা ও শিশু মৃত্যুর হার কমিয়েছে।
তিনি বলেন, বিশ্বের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা আমাদের এই গ্রহের যত্ন নেওয়ার মৌলিক দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। যেখানে আমরা এখনও পরস্পরের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির পূর্ণ বাস্তবায়ন থেকে পিছিয়ে আছি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কিছুদিন আগের একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জাতিসংঘ বলছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় এক কোটি ৪৯ লাখ মৃত্যু ঘটেছে। বিশ্বজুড়ে মানুষের গড় আয়ু ২০১৯ সালের ৭২ দশমিক ৮ বছর থেকে ২০২১ সালে কমে ৭১ বছর হয়েছে। মানুষের গড় আয়ু কমে যাওয়ার পেছনে অন্যতম ক্রীড়ানক হিসেবে কাজ করেছে করোনাভাইরাস মহামারি।
জাতিসংঘ বলছে, ২০৫০ সাল পর্যন্ত অনুমেয় বৈশ্বিক জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি বৃদ্ধি পাবে মূলত আটটি দেশে— কঙ্গো, মিসর, ইথিওপিয়া, ভারত, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন এবং তানজানিয়ায়। তবে ২০৫০ সালের মধ্যে সাব-সাহারান আফ্রিকার দেশগুলোতে জনসংখ্যা প্রত্যাশার তুলনায় অর্ধেকেরও বেশি বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সন্তান জন্মদানের হার কমে যাওয়ায় ২০২২ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের ৬১টি দেশে জনসংখ্যা ১ শতাংশ বা তারও বেশি হ্রাস পেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে জাতিসংঘ।