তিনি অঙ্কের শিক্ষিকা। স্কুলে অঙ্ক করানোর সময় নিজের দায়িত্ব এবং কর্তব্যে অবিচল থাকেন। অঙ্কের প্রতি ভীতি তো কমবেশি সবারই থাকে। সব বিষয়ে উৎরে গেলেও অঙ্কে ডিগবাজির ঘটনা ভুরি ভুরি আছে। তাই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কী ভাবে অঙ্কের ভীতি কাটানো যায় এবং অঙ্কের প্রতি তাদের ভালবাসা বাড়ানো যায়, সে নিয়েই মেতে থাকতেন তিনি।
অঙ্কের মতো জটিল একটা বিষয়কে তিনি নানান কৌশলে জলবৎ তরলং করে ছাত্রদের পড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেন। প্রতিনিয়ত চেষ্টা করতেন অঙ্কের ভূত ছাত্রদের ঘাড় থেকে রাতে নেমে যায়। চেষ্টা করতেন অঙ্কের পোকা তাদের মাথায় ঢুকিয়ে দিতে। কিন্তু অষ্টম শ্রেণির ছাত্রদের কাছ থেকে তাঁকে বারবার শুনতে হয়েছে একটাই কথা— ‘গোট’- অর্থাৎ ছাগল। তিনি কি এতটাই বাজে পড়ান, যার জন্য তাঁকে তাঁর ছাত্ররা ছাগল বলে ডাকে! একরাশ হতাশায় ডুবে গিয়েছিলেন তিনি।
প্রথম দিকে এটাকে তেমন আমল দিতেন না। কিন্তু মত দিন গেছে ততই তিনি হতাশায় ডুবে গেছেন। শেষমেশ নিজের মনে তোলপাড় ফেলা প্রশ্নটা একদিন ছুড়েই দিলেন ছাত্রদের দিকে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও রাখলেন সেই একই প্রশ্ন। তাঁর প্রশ্ন, জীবনভর এই যে বিশেষণ তাঁর নামের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে ছাত্ররা, এমন কটাক্ষের কারণ কী? আমি কি খুব বাজে পড়াই?
যদিও তাঁর বারবার মনে হয়েছে, তাঁর প্রতিটি ছাত্রই যথেষ্ট ভাল। তারা তাকে যথেষ্ট সম্মান করে। তারা এমন রসিকতা অন্তত তাঁর সঙ্গে কখনওই করতে পারে না।
তার পরই সেই শিক্ষিকার প্রশ্ন, কেউ কি বলতে পারবেন, এই রসিকতার মানে কী?
এর পর সেই সোশ্যাল মিডিয়াতেই ছাত্রদের কাছ থেকে কী উত্তর এল জানেন? ছাত্ররা লিখল, আপনি সত্যিই একজন গোট। আর আমাদের কাছে এই গোট (GOAT) মানে, গ্রেটেস্ট অফ অল টাইম (GREATEST OF ALL TIME)।
ছাত্রদের কাছে এই কথা জানতে পেরে শিক্ষিকার চোখের জল আর বাঁধ মানছে না। ভেবেছিলেন কী, আর এখন জানলেন কী!