রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষককে লাঞ্ছিত ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে আশিক উল্লাহ নামে এক শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বুধবার (২৯ জুন) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
বহিষ্কৃত আশিক উল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।
অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, আশিক উল্লাহ একাধিকবার শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশের বিঘ্ন ঘটান। বিভিন্ন সময়ে তিনি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের হত্যার হুমকি দিয়েছেন। বুধবার (২৯ জুন) আইন বিভাগের ক্লাসরুমে শ্রদ্ধেয় একজন শিক্ষিকা ড. বেগম আসমা সিদ্দীকাকে হেনস্তা করার প্রেক্ষিতে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন ও দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার্থে তাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শৃঙ্খলা কমিটি ও সিন্ডিকেটের রিপোর্ট সাপেক্ষে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার বেলা ১১টার দিকে যখন বিভাগটির ৪র্থ বর্ষের ক্লাস চলছিল, তখন অভিযুক্ত আশিক উল্লাহ বিভাগের অধ্যাপক ড. বেগম আসমা সিদ্দিকার সঙ্গে ঝামেলা শুরু করেন। তবে ওই শিক্ষিকা এসব বিষয় নিয়ে বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে চলে আসতে চাইলে শিক্ষিকাসহ ক্লাসের দরজা বন্ধ করে দেন আশিক উল্লাহ। এ সময় ক্লাসের ভেতর থাকা শিক্ষার্থীরা ক্ষেপে যান এবং শিক্ষককে বের করে বিভাগের চেয়ারম্যানের রুমে পৌঁছে দিতে গেলে শিক্ষার্থীদেরকেও হুমকি দেন আশিক।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অফিসের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি অভিযুক্ত আশিক উল্লাহকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে এবং তাকে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এসে আশিক উল্লাহকে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, এর আগেও আশিক উল্লাহর বিরুদ্ধে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা রকম মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে বিভাগের ইমেজ নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছিল। দীর্ঘদিন ধরে নানা বিশৃঙ্খলা করে আসছে সে। এসব কারণে বিভাগের একাডেমিক কমিটি তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। পরে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সুপারিশ পাঠিয়েছিলাম। আগের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এবং আজকের বিষয়টি আমলে নিয়ে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।