পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের সদস্যপদের আবেদনে সমর্থন দিতে রাজি হয়েছে তুরস্ক। যদিও প্রথম দিকে নর্ডিক দেশ দুটির ন্যাটোভুক্তির বিরোধিতা করেছিল তারা (তুরস্ক)। তুরস্কের সমর্থন ছাড়া সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে যোগ দিতে পারত না।
ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, মাদ্রিদে ন্যাটো সম্মেলনে বৈঠকের পর তিনটি দেশ একটি যৌথ স্মারক স্বাক্ষরের পর এই অগ্রগতি হয়েছে। খবর বিবিসি।
এদিকে তুরস্ক অনাপত্তি জানানোয় জোটের প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ন্যাটো নেতারা বুধবার (২৯ জুন) আনুষ্ঠানিকভাবে ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনকে জোটে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানাবেন।
অপরদিকে, রাশিয়া দৃঢ়ভাবে ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের ন্যাটো জোটে যোগদানের বিরোধিতা করে আসছে। সেই সঙ্গে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের অজুহাত হিসেবে পশ্চিমের প্রতিরক্ষামূলক সামরিক জোটের সম্প্রসারণকে ব্যবহার করেছে।
কিন্তু মস্কোর আগ্রাসনের বিপরীত প্রভাব পড়েছে, দুই দেশের জন্য। ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানের পথ এখন পরিষ্কার।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়া ‘বিশেষ অভিযান’ শুরুর পর নিরাপত্তা শঙ্কা থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ন্যাটো জোটের অনেক সদস্যদেশ তাদের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানায়। তবে তুরস্ক শুরু থেকে বলে আসছিল, ফিনল্যান্ড-সুইডেনের ন্যাটোতে যুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় তাদের আপত্তি রয়েছে। এ উদ্যোগে বাধা দেবে তারা।
কিছুদিন আগেও তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছিলেন, ‘পুরো স্ক্যান্ডিনেভিয়ান অঞ্চল সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর অতিথিশালা। এ পরিস্থিতিতে আমরা তাদের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা সমর্থন করতে পারি না। সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তারা (ফিনল্যান্ড ও সুইডেন) অবস্থান সুস্পষ্ট না করা পর্যন্ত আমরা কীভাবে এ প্রক্রিয়াকে সমর্থন করতে পারি?’
ন্যাটো প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, সন্দেহভাজন জঙ্গিদের তুরস্কের প্রত্যর্পণের অনুরোধে সুইডেন আরও ইতিবাচক সাড়া দিতে সম্মত হয়েছে। সেই সঙ্গে এই দুই নর্ডিক দেশ তুরস্কের কাছে অস্ত্র বিক্রির ওপর থেকে তাদের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে।
ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট নিনিস্তো বলেছেন, ‘একে অপরের নিরাপত্তার জন্য হুমকির বিরুদ্ধে পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার জন্য তিনটি দেশ যৌথ স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছে।
আর সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন বলেছেন, এটি ন্যাটোর জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের কার্যালয় জানিয়েছে, তারা সুইডেন এবং ফিনল্যান্ডের কাছ থেকে ‘যা চেয়েছিল তা পেয়েছে। ’
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, তুরস্কসহ ৩০টি দেশ ন্যাটোর সদস্য। জোটের নিয়ম অনুযায়ী, নতুন সদস্য যুক্ত করতে হলে সব সদস্য দেশের সমর্থন প্রয়োজন হয়। এতদিন ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের জন্য ন্যাটো সদস্যপদ পেতে বড় বাধা হয়ে ছিল তুরস্কের আপত্তি। কিন্তু সে বাধা দূর হচ্ছে।