দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের অন্তর্ভুক্ত দেশ কলম্বিয়ার একটি কারাগারে আগুন ও তার ফলে সৃষ্ট দাঙ্গায় ৪৯ জন কয়েদির মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন আরও ৩০ জন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে দেশটির দক্ষিনপশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তুলুয়ার আইএনপিইসি কারাগারে এই ঘটনা ঘটে।
কারাগারে আগুন, দাঙ্গা ও নিহতের ঘটনা কলম্বিয়ার সংবাদমাধ্যম কারাকোল রেডিওকে নিশ্চিত করেছেন ওই কারাগারের কারাপ্রধান জেনারেল টিটো ক্যাস্টিল্যানোস। কারাকোল রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ ও ‘বিপর্যয়কর’ উল্লেখ করে ক্যাস্টিল্যানোস বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছে, কয়েকজন কয়েদি তাদের বিছানার তোশকে আগুন দিয়েছিল। তারপর গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়— কারাগারে আগুন লেগেছে।’
‘এতে স্বাভাবিকভাবেই অন্য কয়েদিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং কারাগার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন। এ সময় কারারক্ষীদের সঙ্গে তাদের সংঘাত হয়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাধ্য হয়ে গুলি ছোড়া শুরু করে রক্ষীরা। তার ফলেই ঘটেছে হতাহতের ঘটনা।’
আইএনপিইসি কারাগারে মোট কয়েদির সংখ্যা ১ হাজার ২৬৭ জন। কারাগারের যে ব্লকে আগুন ধরানো হয়েছিল, সেখানে ওই সময় ছিলেন ১৮০ জন কয়েদি।
লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশের মতো কলম্বিয়ার বিভিন্ন কারগারেও ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েদির সংখ্যা অনেক বেশি। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, কলম্বিয়ার সব কারাগারের মোট কয়েদি ধারণ ক্ষমতা ৮১ হাজার, কিন্তু বর্তমানে দেশটির বিভিন্ন কারাগারে বন্দি কয়েদির সংখ্যা প্রায় ৯৭ হাজার।
আইএনপিইসি কারাগারে দাঙ্গার এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভান ডিউক। এক টুইটবার্তায় প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তুলুয়া শহরের আইএনপিইসি কারাগারে হতাহতের ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত। আমি কারাপ্রধান টিটো ক্যাস্টিল্যানোসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি এবং এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।’
এর আগে ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময় এই রোগ থেকে সুরক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছিল কলম্বিয়ার বিভিন্ন কারাগারে। সে সময় কারারক্ষীদের সঙ্গে সংঘাতে নিহত হয়েছিলেন প্রায় ২৪ জন কয়েদি।
সেই বিক্ষোভের পর লঘু অপরাধে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কিছুসংখ্যক কয়েদিকে মুক্তি দিয়েছিল কলম্বিয়ার সরকার।
সূত্র: রয়টার্স