টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে সুনামগঞ্জবাসী। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল ফোনে চার্জ দিতে পারছেন না বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ। চার্জের অভাবে প্রায় সবার মোবাইলই এখন বন্ধ। এই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন একদল ব্যবসায়ী। প্রতি মোবাইল চার্জ দিতে তারা ঘণ্টাপ্রতি নিচ্ছেন ১০০ টাকা।
সুনামগঞ্জ শহরের আব্দুজ জহুর সেতু ও পশ্চিম বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় মোবাইল চার্জের ব্যবসা করছেন ১৫-২০ জন ব্যবসায়ী। মোবাইল ফোনে চার্জ দেওয়ার জন্য সেখানে মানুষের লম্বা সারি দেখা গেছে। প্রতিটি মোবাইল চার্জ দিতে গুনতে হচ্ছে ১০০ টাকা। কোথাও কোথাও ১২০ থেকে ১৫০ টাকা করেও নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, অধিকাংশ মানুষের মোবাইল ফোনে চার্জ নেই। তারা কয়েকদিন ধরে তাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন তারা। মোবাইলে চার্জ দেওয়ার জন্য উপায় খুঁজছেন অনেক মানুষ। আর এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে অমানবিক আচরণ করছেন কিছু ব্যবসায়ী।
আব্দুজ জহুর সেতুতে ফোন চার্জ করতে আসা আজিজুর রহমান নামের একজন বলেন, “কয়েকদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই; মোবাইল ফোনের চার্জ শেষ। আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তাই ফোন চার্জ করতে এসেছি। কিন্তু এখানে এক ঘণ্টা চার্জ বাবদ ১০০ টাকা দিতে হচ্ছে।”
আফনান আহমেদ নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, “সকালে ৩০-৪০ টাকা দিয়ে মোবাইল চার্জ করা গেছে। কিন্তু ভিড় বেড়ে যাওয়ায় এখন প্রতিটি মোবাইল চার্জ করতে ১০০ টাকা করে চাচ্ছে তারা।”
নাম প্রকাশ না শর্তে আব্দুজ জহুর সেতু এলাকার এক দোকানি বলেন, “জেনারেটরের মাধ্যমে আমরা মোবাইল চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। জেনারেটর চালানোর তো তেল খরচ আছে। অনেকের ফোন চার্জ করতে অনেক সময় লাগছে। সেই হিসাবে বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে না।”
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইমরান শাহরিয়ার বলেন, “বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সদরের বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যারা জেনারেটর দিয়ে মোবাইল চার্জ দিয়ে বেশি টাকা নিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”