বগুড়ার দুপচাচিয়ার কলেজ গেট এলাকায় ধানের চাতালে কর্মরত মাকে মজুরি কম দেওয়ার প্রতিবাদ করায় জুয়েল হোসেন নামে এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার সত্যতা পেয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (১০ জুন) এ ঘটনায় ওই কিশোরের মা বাদী হয়ে মামলা করলে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- দুপচাঁচিয়া উপজেলার ছোট পাইকপাড়া গ্রামের আফসার আলী (৬৫) ও ধারশুন গ্রামের সাদিকুল ইসলাম ভোলা (২৫)।
নিহত কিশোরের মা জোছনা বেগম জানান, মাসিক চার হাজার টাকা মজুরির বিনিময়ে স্থানীয় একটি চাতালে কাজ নেন তিনি। প্রতি বছর মজুরি বৃদ্ধির কথা বললেই ৫০০ টাকা করে মজুরি কমিয়ে দিতেন মালিক। এভাবে গত দু’বছরে এক হাজার টাকা কমিয়ে তিন হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। অভাবের কারণে এই বেতনেই কাজ করতে থাকেন জোছনা বেগম। কিন্তু গত মাসে আবারও ৫০০ টাকা কম দেন চাতাল মালিক। বিষয়টি জুয়েল জানতে পেরে গত ৪ জুন মাকে এভাবে ঠকানোর প্রতিবাদ করে এবং চাতাল মালিক আক্কাছ আলী ওরফে রড আক্কাছের কাছে এর কারণ জানতে চায়।
তিনি আরও জানান, এ সময় মালিক তাকে প্রথমে বকাঝকা করেন। একপর্যায়ে অন্য শ্রমিকদের সহায়তায় জুয়েলকে বেদম মারধর করেন আক্কাছ আলী। এতে জুয়েল গুরুতর আহত হলে তাকে কোনো হাসপাতালে ভর্তি না করতে এবং বিষয়টি অন্য কাউকে না জানাতে হুমকি দেন তিনি। পরে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জুয়েলের মৃত্যু হয়।
জোছনা বেগম বলেন, “আমার ছেলেকে মারধর করে মারাত্মক আহত করেন ওই চাতাল মালিক ও তার লোকরা। তারা জুয়েলকে কোনো হাসপাতালে ভর্তিও করতে দেয়নি। তাদের ভয়ে আমি আহত ছেলেকে নিয়ে কাহালুতে আমার ফুফাতো বোনের বাসায় যাই। সেখানে বিনা চিকিৎসায় আমার ছেলে মারা যায়।”
স্থানীয় চিকিৎসকরা বলেছেন, “সঠিক সময়ে জুয়েলকে হাসপাতালে নিলে বাঁচানো যেত।”
শুক্রবার পুলিশ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, “অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। জুয়েলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।”