ল্যাম্পপোস্টের তলায় পলিথিন ঢাকা দেওয়া উঁচু মতো ঢিবিটা বগার ভাত কাপড়ের ঠিকানা। ওখানে বসেই সে সারাদিন কারও জুতো পালিশ করছে, তো কারও জুতোর বুকে পেরেক ঠুকছে। প্রতিদিনের চেনা ছবি।
ঝমঝম করে বৃষ্টি হচ্ছে সেই বিকেল থেকে। এত বৃষ্টি ছাতা দিয়ে কিছু হয় না। লোকজন তেমন নেই। বগা বাড়ি চলে গেছে। চারিদিক অন্ধকার।
মেনরোড ধরে মাঝরাতে একের পর এক ট্রাক যাচ্ছে। ল্যাম্পপোস্টের তলায় আলো পড়ছে। ট্রাকটা বেরিয়ে যাবার পর অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে।
পিচ রাস্তার ওপর জমে যাওয়া জল যেদিকটা ঢাল বেশি,সেদিক দিয়ে ধীরে ধীরে নেমে যাচ্ছে।
হালদার পাড়ার লোক বিয়ে বাড়ি গিয়েছিল। বরযাত্রীর বাস ল্যাম্পপোস্টের কাছে দাঁড়াতেই একে একে সবাই নেমে আসছে। আর বগার ভাত-কাপড়ের ঢিবিটার দিকে হাত বাড়িয়ে ইঙ্গিত করছে। দাঁড়িয়ে থাকা বাসের লাইটে পলিথিন চাপা দেওয়া ঢিবিটা পরিস্কার দেখা যাচ্ছে।
ওখানে যেন জল একটু বেশি জমে আছে।
একজন বলল, বগার আর জুতো পালিশ করার দরকার নেই। আমরাই এবার থেকে বগার জুতো পালিশ করে দেব। বগা আর মুচি নেই। বগা বাবু হয়ে গেছে।
আর একজন বলল, কেন? মুচি আবার বাবু হতে যাবে কেন?
ঈশ্বরের লীলা। আজ রাত আটটার লটারি বগাকে মুচি থেকে বাবু করে দিয়েছে। দুকোটি টাকা পেয়েছে।