কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে হঠাৎ করে লালমনিরহাটের তিস্তা নদীতে পানি বেড়েছে। ফলে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (০৯ জুন) দুপুর ১২টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার। যা (স্বাভাবিকের চেয়ে ৫২ দশমিক ৬০সেন্টিমিটার) বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা জানান, কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টি ও ভারতের গজলডোবা ব্যারেজে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় উজানের ঢল বেড়ে যায়। ফলে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ বেড়েছে। যদিও এখনো জেলার তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। তবে জেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়া পানি জমেছে জেলা শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত এলাকায়। এসব পানি তিস্তা ও ধরলা নদীতে চলে আসায় পানি অনেকটা বেড়েছে।
তারা আরও জানায়, তিস্তা নদীর বাম তীরে ভাঙন ও বন্যা থেকে রক্ষায় আদিতমারী উপজেলার গোবর্দ্ধন এলাকায় সলেডি স্প্যার বাঁধ ২ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। গত বছর কিছু অংশে ভাঙন দেখা দিলে তা সংস্কার শুরু করে। সেই সংস্কার কাজ শেষ হতে না হতেই আবারও সেটি ভেঙে যাচ্ছে। এত দিনে পানি কমে গেলেও এবার সেটির কোনো কাজ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড।
স্থানীয়রা জানায়, শুকিয়ে যাওয়া মৃতপ্রায় তিস্তা আবারো ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সির্ন্দুনা, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা তীরবর্তী জেলেদের কর্মব্যস্ততা দেখা দিয়েছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানির প্রবাহ কিছুটা বেড়েছে। ব্যারাজ রক্ষার্থে সবগুলো জলকপাট খুলে না দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতি বছর জুন মাসে বন্যা দেখা দেয়। তাই তিস্তাপাড়ের মানুষকে সর্তক থাকতে বলা হচ্ছে।