চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন এখনও জ্বলছে। এরই মধ্যে ঝরে গেছে আট ফায়ার ফাইটারসহ ৪৯ তাজা প্রাণ। দগ্ধ ও আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি দুই শতাধিক মানুষ। ফায়ার সার্ভিস বলছে, লাশের সারি আরও দীর্ঘ হতে পারে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
রোববার (৫ জুন) বিকেল ৪টার পর চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের প্রাণ নিভে যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে দেখা যায়, পুরো ডিপো এলাকা যেন যুদ্ধপরবর্তী ধ্বংসস্তূপ। এখানে-ওখানে ছড়িয়ে-ছটিয়ে রয়েছে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ছোট ছোট কনটেইনার। এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে অনেক পণ্যবোঝাই কনটেইনার। রাতভর ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের আগুন নেভানোর যে প্রাণান্তকর চেষ্টা ছিল, তা ডিপো প্রাঙ্গণ দেখে সহজেই বোঝা যাচ্ছে।
শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে লাগা আগুন এখনো জ্বলছে। আগুন নেভাতে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা একযোগে কাজ করছেন। এখনো বিভিন্ন কনটেইনারে দেখা যাচ্ছে আগুনের লেলিহান শিখা।
সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের আরবান সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিমের প্রধান আরিফুল ইসলাম হিমেল বলেন, সকাল থেকে (রোববার) আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। এখনো পুরোপুরি নেভেনি। কিছু কনটেইনারে এখনো আগুন জ্বলছে।
বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এবং ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কো-অর্ডিনেট করে রাসায়নিক ও সাধারণ কনটেইনার আলাদা করার চেষ্টা চলছে। আর যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে সে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আর যেন কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সেনাবাহিনীর প্রায় ২০০ জনবল এখানে কাজ করছে।
তিনি বলেন, রাসায়নিক পদার্থ যেগুলো বের হয়ে গেছে, তা বন্ধ করার চেষ্টা করছি। যাতে পরিস্থিতি আর খারাপ না হয়। কিছু সময় দিতে হবে।
শনিবার রাতে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পর ইউনিট আরও বাড়ানো হয়। এখন ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।