গত মাসে গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর প্রথমবারের মতো দেশটির সরকার সাড়ে ৪ লাখ টনের বেশি এই খাদ্যশস্যের চালান পরিবহনের অনুমতি দিয়েছে। এই চালানের বেশিরভাগই বাংলাদেশ, ফিলিপাইন, তানজানিয়া এবং মালয়েশিয়ায় গেছে বলে দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
দেশটির সরকারি ও শিল্প কর্মকর্তারা রয়টার্সকে বলেছেন, সরকার ৪ লাখ ৬৯ হাজার ২০২ টন গম পরিবহনের অনুমতি দিয়েছে। তবে দেশের বিভিন্ন বন্দরে কমপক্ষে ১৭ লাখ টন গম আটকে রয়েছে। মৌসুমি বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় এসব গম নষ্ট হতে পারে।
ভারতের সরকারি জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেছেন, যেসব চালানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে সেগুলো মূলত বাংলাদেশ, ফিলিপাইন, তানজানিয়া এবং মালয়েশিয়ায় চলে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা বলেছেন, নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারতীয় গম রপ্তানি এপ্রিলের রেকর্ড ১ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন টন থেকে মে মাসে ১ দশমিক ১৩ মিলিয়ন টনে নেমে এসেছে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গমের উৎপাদনকারী দেশ ভারত। তীব্র তাপদাহের কারণে উৎপাদন হ্রাস এবং অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম রেকর্ড উচ্চতায় চলে যাওয়ার পর দেশটির সরকার গত ১৪ মে গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
তবে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে যারা ঋণপত্রের বিপরীতে মূল্য পরিশোধ করেছে এবং যেসব দেশের সরকার খাদ্য নিরাপত্তার চাহিদা মেটাতে ভারত সরকারের কাছে সরবরাহের অনুরোধ জানিয়েছিল, ব্যতিক্রম হিসেবে সেসব দেশে গমের চালান সরবরাহের অনুমতি দেওয়া হয়।
বৈশ্বিক বাণিজ্যিক সংস্থার অন্তত তিনজন ভারতীয় ডিলার রয়টার্সকে বলেছেন, কিছু চালান চলে যাওয়ার পরও দেশের বিভিন্ন বন্দরে কমপক্ষে ১৭ লাখ টন গম এখনও পড়ে আছে।
নিষেধাজ্ঞার আগে রপ্তানিকারকরা অস্বাভাবিকভাবে বিশাল পরিমাণ গম বন্দরে স্থানান্তরিত করেছিলেন। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কৃষ্ণ সাগরের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বৈশ্বিক বাজারে গমের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার আশায় তারা আগেই গম পাঠিয়ে দেন।
নয়াদিল্লি এ বছর ৮০ লাখ থেকে এক কোটি টন বা তারও বেশি গম চালানের অনুমোদন দেবে বলে আশা করেছিলেন তারা। গত বছর ভারতের এই রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৭২ লাখ টন।
তীব্র খাদ্য সংকটের কারণে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের সরকার সম্প্রতি ভারতকে ১৫ লাখ টন গম সরবরাহের অনুরোধ জানিয়েছে।