গত তিন মাসের যুদ্ধে ইউক্রেনের প্রায় ২০ ভাগ অঞ্চল রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বৃহস্পতিবার পূর্ব ইউরোপের দেশ লুক্সেমবার্গের পার্লামেন্ট সদস্যদের উদ্দেশে দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় এ তথ্য দিয়েছেন তিনি।
দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় ইউরোপকে ইউক্রেনের পাশে থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।
ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনের অস্তিত্ব বিপন্নের মুখে। আগ্রাসনকারী বাহিনী ইতোমধ্যে দেশের ২০ ভাগ অঞ্চলের দখল নিয়ে ফেলেছে।’
‘নিজেদের পুরো সামরিক শক্তি নিয়ে ইউক্রেন দখলে নেমেছে রাশিয়া। নিজেদের জীবন, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের এখন ব্যাপক শক্তিশালী ও বিশাল রুশ বাহিনীর সঙ্গে লড়তে হচ্ছে।’
‘লুক্সেমবার্গের এমপিদের মাধ্যমে আমি ইউরোপের সবাইকে এই বার্তা দিতে চাই যে, এই যুদ্ধে আপনারা ইউক্রেনের পাশে থাকুন, ন্যায়ের পক্ষে থাকুন।’
এর আগে, ১ জুন মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজম্যাক্স টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি জানিয়েছিলেন, ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানে হামলার তেজ বাড়িয়েছে রুশ বাহিনী।
দেশটির পূর্বাঞ্চলে এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় দুই প্রদেশ দনেতস্ক ও লুহানস্কে রুশ সেনাদের গুলি ও গোলার আঘাতে প্রতিদিন ৬০ থেকে ১০০ জন ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হচ্ছেন এবং আরও প্রায় ৫০০ সেনা আহত হচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণা দেওয়ার দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।
বুধবার ৯৮ তম দিনে পৌঁছেছে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান। ইতোমধ্যে দেশটির দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেতস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম এবং মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার আংশিক এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে।
ইউক্রেনের প্রথম যে অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ রুশ বাহিনী নিয়েছিল, সেটি দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর খেরসন। গত ২ মার্চ খেরসন দখল করে রুশ সেনারা।