দেশ বিদেশে অসংখ্য ভক্ত শ্রোতাদের কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন প্রখ্যাত ভারতীয় সঙ্গীত শিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে।
মঙ্গলবার (৩১ মে) রাতে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় নজরুল মঞ্চে গান গাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয় এক হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কী কারণে মৃত্যু হয়েছিল তার, তা নিয়ে জল্পনা ছিল ভক্তদের ভেতর। অবশেষে জানা গেল কেকের মৃত্যুর কারণ।
চিকিৎসকেরা জানান, হার্টের ব্লকেজই কেকের জন্য কাল হয়েছে। হার্টের এই ব্লকেজের কথা কাউকে জানাননি তিনি। তবে মুম্বাই থেকে কলকাতার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগে স্ত্রী জ্যোতিলক্ষ্মী কৃষ্ণাকে বলেছিলেন, “শরীরটা ইদানীং ভালো যাচ্ছে না। আয়োজকদের কাছ থেকে অগ্রিম নিয়েছি। তাই শেষ মুহূর্তে পারফর্ম না করে পারছি না।”
ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, গাইতে আর নাচতে গিয়ে অতিরিক্ত উত্তেজনায় তার হার্টের ব্লকেজ বেড়ে গিয়ে আচমকাই বন্ধ হয়ে যায় রক্ত চলাচল। ফলে তার কার্ডিয়াক অ্যাটাক হয়।
হাসপাতাল সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, কেকের হৃদযন্ত্রের বাম দিকের ধমনিতে ৭০% ব্লকেজ ছিল।
কেকের ম্যানেজার বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, “নজরুল মঞ্চে মঙ্গলবার প্রচণ্ড গরম ছিল। ওকে জল খেতে হচ্ছিল বারবার। তবু টানা দেড় ঘণ্টা হাসিমুখে গেয়েছেন, দর্শকদের আবদার রক্ষা করেছেন। হোটেলের লবিতে দাঁড়িয়ে ভক্তদের সেলফির আবদারও মিটিয়েছেন। অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে হোটেলের ঘরে ফিরে শেষ পর্যন্ত সেই অসুস্থতার পথ ধরে লুটিয়ে পড়েন হোটেলকক্ষে। তারপর হোটেল থেকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, সব শেষ।”
এদিকে কেকের স্ত্রী বলেন, “মুম্বাই ছাড়ার আগে বারবার বলেছিল, শরীরটা ভালো নেই। ব্যথা ছিল হাতে। তখনো আমরা বুঝতে পারিনি, ওর শরীরে বড় কোনো রোগ বাসা বেঁধে আছে। এখন জানতে পারছি, হৃদরোগের প্রাথমিক উপসর্গস্থল এই হাতে ব্যথা।”
এর আগে বুধবার স্থানীয় সময় সকালে এসএসকেএম হাসপাতালে কেকে’র ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। রবীন্দ্র সদনে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পরই শিল্পীর মরপদেহ নিয়ে মুম্বাইয়ে ফেরেন তার স্বজনেরা।
সোমবার মুম্বাই থেকে গানের দল নিয়ে কলকাতায় আসেন কেকে। বুধবার তার আরও একটি শো করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন এ সঙ্গীতশিল্পী। তার শেষ স্মৃতির এক করুণ সাক্ষী হয়ে রইলো সুরের শহর কলকাতা।