প্রথমার্ধে আধিপত্য করেও গোল পায়নি লিভারপুল। বিরতির পর সুযোগ কাজে লাগিয়ে এগিয়ে গেলো রিয়াল মাদ্রিদ। সমতায় ফেরা হয়নি ইয়ুর্গেন ক্লপের দলের। ভিনিসিয়ুসের দেওয়া সেই এক গোলের পুঁজি নিয়ে অল রেডদের স্বপ্ন ভঙ্গ করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৪তম শিরোপা ঘরে তুলেছে রিয়াল। ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ ১-০ গোলে হারিয়েছে লিভারপুলকে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে এমনটি আগে বোধহয় হয়নি। বিচিত্র কারণে পূর্ব নির্ধারিত সময়ে খেলা শুরু হতে পারেনি। তিন দফা সময় পরিবর্তন করে শেষ পর্যন্ত ৩৬ মিনিট পর খেলা মাঠে গড়ায়। যদিও দেখানো হয়েছে নিরাপত্তাজনিত কারণ।
ফাইনাল খেলা শুরুর আগে ছোট্ট পরিসরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও হয়েছে। তবে প্যারিসের স্তাদে ডু ফ্রান্সে খেলা শুরু হতেই আধিপত্য দেখাতে শুরু করে লিভারপুল। সাদিও মানে-মোহামেদ সালাহরা একের পর এক আক্রমণ হেনে রিয়ালের রক্ষণে বারবারই ফাটল ধরানোর চেষ্টা করে। প্রথমার্ধে বল দখলে এগিয়ে থেকে গোল করার আপ্রাণ চেষ্টা করলেও সবকিছুই ছিল নিষ্ফল। লক্ষ্যভেদ যে হয়নি। পরিষ্কার করে বলতে গেলে থিবো কোর্তোয়া তেকাঠির নিচে ছিলেন দুর্বার। একের পর এক আক্রমণ ফিরিয়ে দলকে ম্যাচে রাখেন এই বেলজিয়ান।
ম্যাচ ঘড়ির ১৬ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে লিভারপুল আক্রমণের ঝড় বইয়ে দেয়। ১৬ মিনিটে দুটি আক্রমণ থেকে লিভারপুল গোলমুখ উন্মুক্ত করতে পারেনি। শুরুতে লুইস দিয়াজের শট ব্লক হয়। ঠিক এরপর মোহামেদ সালাহর ৬ গজ দূর থেকে নেওয়া শট গোলকিপার কোর্তোয়া প্রতিহত করেন।
এক মিনিট পর থিয়াগো আলকানতারার শটও গোলকিপার প্রতিহত করেন। ১৮ মিনিটেও সাদিও মানের পাসে মোহামেদ সালাহর শট গোলকিপার প্রতিহত করে দলকে ম্যাচে ভালোভাবেই রাখেন।
দুই মিনিট পর থিয়াগোর পাসে সাদিও মানের জোরালো শট গোলকিপার ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্ষা করেন। বল তার হাতে লেগে পোস্ট ছুঁয়ে গোল হয়নি। ৩৪ মিনিটে সতীর্থের ক্রসে সালাহর হেড গোলকিপারের গ্লাভসে জমা পড়ে।
রিয়াল একটু গুছিয়ে নিয়ে প্রথমার্ধের শেষের দিকে সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু ৪৩ মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে করিম বেনজেমার শট জালে জড়ালেও মেলেনি গোল। ভিএআর দেখে গোল দেওয়া হয়নি।
গোলশূন্য বিরতি নিয়ে দুই দলকে ড্রেসিংরুমে যেতে হয়েছে। সেখান থেকে ফিরে গোল পেতে বেশি দেরি হয়নি কার্লোস আনচেলত্তির দলের।
৫৯ মিনিটে ফেড্রিকো ভালভারদের এসিস্টে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ৬ গজ দূরত্বে থেকে দারুণ প্লেসিং করে জাল কাঁপান। এক গোলে পিছিয়ে থেকে লিভারপুল ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে। দারুণ সুযোগও পেয়েছিল। কিন্তু সেই কোর্তোয়া তাদের হতাশ করেছেন বারবারই।
৬৪ মিনিটে সালাহর জোরালো শট পোস্টে ঢোকার মুহূর্তে গোলকিপার ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিহত করেন। ৮২ মিনিটে সালাহ ডান দিক দিয়ে ঢুকে কোনাকোনি শট নিলেও গোলকিপার হাত দিয়ে প্রতিহত করে গোল হতে দেননি।
শেষ পর্যন্ত রিয়ালের উৎসবের রাতে লিভারপুরের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। ২০১৮ সালে ফাইনালে হারের যে আরও একবার পুনরাবৃত্তি হলো!