অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের মামলায় ভারতে গ্রেপ্তার এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) বিচার বাংলাদেশ ও ভারত; দুই দেশের আদালতেই হবে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার ড. মোজাম্মেল হক খান।
শুক্রবার (২৭ মে) সকালে মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা এলাকায় কলেজে দুর্নীতিবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
ড. মোজাম্মেল হক খান বলেন, পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ৩৫টি মামলা হয়েছে। এরই মধ্যে পিকে হালদারের গ্রেপ্তার হওয়া সহযোগীরা অর্থপাচারের বিষয়ে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। পিকে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারলে আরও অজানা তথ্য বেরিয়ে আসবে। এসব তথ্য মামলা নিষ্পত্তি করতে সহায়তা করবে।
দুদক কমিশনার আরও বলেন, ভারতে গ্রেপ্তার হওয়া পিকে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া দুদকের মূল কাজ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারও বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ এলে প্রাথমিক তদন্ত করে তাদের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। অর্থপাচারকারীদের এই নামের তালিকা সবসময় হালনাগাদ করা হচ্ছে। যারা দেশের টাকা পাচার করছে এবং করেছে তাদের নামের তালিকা করা হচ্ছে। এই টাকা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে এবং যেসব অপরাধী পালিয়ে দেশের বাইরে গিয়েছে, তাদের ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
দেশের চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পিকে হালদার নামে-বেনামে বিভিন্ন কোম্পানির নামে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা তোলেন। এই টাকা আর ফেরত না আসায় ওই চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের টাকা বুঝিয়ে দিতে পারছে না। প্রতিষ্ঠান চারটি হলো- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)।
পিকে হালদারের এই আর্থিক কেলেঙ্কারি জানাজানি হয় ২০২০ সালের শুরুতে। আর পিকে হালদার দেশ ছাড়েন ২০১৯ সালের শেষ দিকে। ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী। এরপর মামলাটিতে তদন্ত করে দুদক ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়।
দুদকের মামলায় অভিযোগ করা হয়, পিকে হালদার বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদ দখলে রেখেছেন।