মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বাদীর মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে গাইবান্ধার ফুলছড়ি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামসুল হকের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে আদালতে মামলাও হয়েছে। পুলিশের হুমকিতে ভুক্তভোগী ওই নারী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন।
শনিবার (২১ মে) তিনি গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে এসে সংবাদ সম্মেলন করে এসআইয়ের শাস্তি দাবি করেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা বর্তমানে রংপুরের মিঠাপুকুর থানায় কর্মরত আছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ওই নারী অভিযোগ করে জানান, তার বিধবা মা সোনাভান বেওয়া ২০২১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর জমিজমা নিয়ে ফুলছড়ি থানায় আটজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ২৪ অক্টোবর রাতে মামলার তদন্ত করতে যান ফুলছড়ি থানার এসআই শামসুল হক।
চরাঞ্চলের নিধুয়া পাথারের মধ্যে বাদীর বাড়িতে ঢুকে ঘর থেকে তার মা ও ছোট ভাইকে বের করে দিয়ে ভুক্তভোগী নারীকে কু-প্রস্তাব দেন। এক পর্যায়ে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর ভয় দেখিয়ে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। পরদিন ভুক্তভোগী নারী থানায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাওসার আহমেদকে ঘটনাটি জানান। কিন্তু ওসি তাদের অভিযোগের কোনো সুরাহা না করে থানা থেকে বের করে দেন।
এ ঘটনার পর ১১ ডিসেম্বর তদন্তের কথা বলে এসআই শামসুল হক ভুক্তভোগী নারীকে বালাসীঘাটে ডাকেন। সেখানে তার খালার বাড়িতে আবারও ধর্ষণ করেন। এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি ওষুধ প্রয়োগে তার আড়াই মাসের বাচ্চা নষ্ট করেন এসআই শামসুল। এতে ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর গত ৯ জানুয়ারি গাইবান্ধা পুলিশ সুপার বরাবরে আবেদন করেন।
ইতোমধ্যে অভিযুক্ত এসআই শামসুল হক ফুলছড়ি থানা থেকে বদলি নিয়ে রংপুরের মিঠাপুকুর থানায় যোগ দেন। থানায় কোনো প্রতিকার না পেয়ে ভুক্তভোগী নারী গত ১৬ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা করেন।
দীর্ঘদিনেও পুলিশ কর্মকর্তা শামসুল হকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ওই নারী গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে এসে সংবাদ সম্মেলন করেন এবং সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
তিনি সাংবাদিকদের কাছে কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, “ধর্ষণের দ্রুত বিচার না পেলে তিনি আত্মহননের পথ বেছে নিতে বাধ্য হবেন।”
এ ব্যাপারে ওসি কাওসার আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানান, ধর্ষণের ঘটনা সম্পর্কে তিনি অবহিত নন।