জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশের গ্রামের নারীদের বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে, এসব প্রভাব মোকাবেলায় নারীদের সর্বোচ্চ ৩০% বেশি খরচ করতে হয়
বুধবার (১৮ মে) প্রকাশিত ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইআইইডি) করা গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণায় বলা হয়, দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের গ্রামীণ একটি পরিবারকে গড়ে মাসিক বাজেটের ১৫% খরচ করতে হয়। তবে নারী আয় করেন এমন বাড়িতে খরচের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ। এর কারণ নারীরা পুরুষের চেয়ে কম আয় করেন।
এছাড়া, বাংলাদেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের অনেক পুরুষই নারীকে বাড়ি সামলানোর দায়িত্বে রেখে প্রতি মৌসুমে অন্য শহরে চলে যান। তখন বাড়ির দায়িত্ব পালন করতে হয় এই নারীদের।
১০ জেলার তিন হাজার ৯৪টি গ্রামীণ ঘরের ওপর জরিপ করা হয়। ঝড়, বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও গরমের কারণে এসব পরিবারের খরচের ওপর কেমন প্রভাব পড়ে তা গবেষণায় দেখা হয়। এসব পরিবারের ৪৩% পরিবার বন্যায় আক্রান্ত, ৪১% ঝড় এবং ৮৩% খরা বা লবণাক্ততার মতো দীর্ঘমেয়াদী দুর্যোগে আক্রান্ত।
২০২১ সালে প্রতিটি পরিবারের দুর্যোগ মোকাবেলায় ব্যয় ছিল সাত হাজার ৫০০ টাকা। পুরো গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর প্রাক্কলন করা হলে তার পরিমাণ প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা।
গবেষণায় দেখা যায়, বন্যার কারণে নারীর আয়ে চলে এমন পরিবারগুলোতে খরচ পুরুষের আয়ে চলা পরিবারগুলোর চেয়ে ২% বেশি। আর প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে তাদের ৩% বেশি খরচ করতে হয়। এছাড়া ঝড়ের কবল থেকে বাঁচতে নারীদের ৩০% বেশি খরচ করতে হয়। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সময় এমনটা দেখা গেছে।
গবেষকরা বলছেন, এ কারণে বাংলাদেশ সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোকে তাদের তহবিল জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগপ্রবণ এলাকার এসব মানুষগুলোর জন্য বেশি খরচ করা উচিত।