বরিশালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে আসা প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শুক্রবার (২০ মে) সকাল ৮টার দিকে তাদেরকে আটক করা হয়। রাত ১২টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল র্যাব-৮ এর মিডিয়া সেল।
র্যাব জানায়, গোপন সূত্রে পাওয়া সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে বরিশাল লঞ্চ ঘাটের ২ নম্বর গেটের সামনে থেকে ওই ৩ জনকে আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন— বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার উত্তর ঝাড়াখালী কড়ইবাড়িয়া গ্ৰামের মো. আজিজুল হক সিকদারের ছেলে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী মো. মাহাবুব আলম তুহিন সিকদার (৪২), বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার পচা কুড়ালিয়া বড় পাড়া গ্ৰামের মৃত মঈন উদ্দিন খান চুন্নুর ছেলে মো. রিয়াজ হোসেন (২৯) এবং বরগুনা জেলার সদর উপজেলার কদমতলা উত্তর ইট বাড়িয়া মো. শাহ জাহানের ছেলে মো. আল আমিন (২৯)।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা শুক্রবারের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সি পরীক্ষার্থী হিসাবে অংশগ্রহণের জন্য ঢাকা থেকে বরিশাল এসেছে বলে স্বীকার করেছে। এদের মধ্যে ১ নম্বর আসামী মো. মাহাবুব আলম তুহিন সিকদার স্বীকার করে যে, সে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাসহ বিভিন্ন সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন মেধাবী ছাত্রদের ব্যবহার করে বিভিন্ন চাকুরির প্রার্থীদের পক্ষে পরীক্ষা দিয়ে দিত। এ সময় প্রতি প্রার্থীর কাছ থেকে ৮-১০ লক্ষ টাকা করে নিত। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাক্তির নামের সীল ব্যবহার করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যাংকের চেক ব্যবহার করে আসছিলো।
র্যাব আরও জানায়, ২ নম্বর আসামী মো. রিয়াজ হোসেন ও ৩ নম্বর আসামী মো. আল আমিন স্বীকার করে যে, তারা ২০ মে শুক্রবার দ্বিতীয় ধাপের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সি পরীক্ষার্থী হিসাবে অংশগ্রহণ করার জন্য ১ নম্বর আসামীর কাছ থেবে ৩০ হাজার টাকা নেয়। এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পর সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে আরও দুই লক্ষ টাকা দিতে হবে এমন শর্ত ছিল।
র্যাব-৮ বরিশাল সিপিএসসির ডিএডি মো. এনামুল হক জানান, আটককৃতরা বিভিন্ন সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির মাধ্যমে অংশগ্রহণের একটি চক্র। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাক্তির নামের সীল মোহর, বিভিন্ন প্রার্থীর বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনলাইনের আবেদন কপি (৩৬ টি), বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই (১০ টি) ও মুড়ি বই (৭ টি), জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং নগদ টাকা জব্দ করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
র্যাব-৮ বরিশাল কোম্পানী অধিনায়ক উপ-পরিচালক মেজর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হবে। ভবিষ্যতে র্যাবের এ ধরণের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।