বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের নদ-নদীগুলোর পানি বেড়েই চলেছে। ফলে সিলেট জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
এরই মধ্যে গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলা সদর পানিতে তলিয়ে গেছে। বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করা সিলেটে সুরমা নদীর পানিও নগরীতে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। জেলা সদরের সঙ্গে বিভিন্ন উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে সিলেট সদর উপজেলায় নৌকাডুবিতে দুই ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠে পড়ায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, সোমবার (১৬ মে) বিকেল ৩টায় সুরমার পানি সিলেটের কানাইঘাটে বিপৎসীমার ১৫২ সেন্টিমিটার, একই সময়ে কুশিয়ারার পানি অমলশীদে বিপৎসীমার ১১০ সেন্টিমিটার, শেওলায় কুশিয়ারা বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার এবং জৈন্তাপুরে সারিঘাট নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ জানান, সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টির সঙ্গে যোগ হয়েছে উজান থেকে নেমে আসা ঢল। ভারতের মেঘালয়, ত্রিপুরা ও আসাম প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে দেশের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কানাইঘাট থেকে সংবাদকর্মী আলাউদ্দিন জানান, সুরমা ডাইকের গৌরিপুর-কুওরঘড়ি এলাকায় ৬টি ভাঙ্গন কবলিত পয়েন্ট দিয়ে তীব্র গতিতে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় কাঁচা বাড়ি-ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। উপজেলার বেশিরভাগ ইউনিয়নের বিপুল সংখ্যক বাড়ি-ঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। মাঠ ও গোচারণ ভূমিতে পানি উঠায় গো-খাদ্য সংকটসহ মৎস্য খামারিরাও রয়েছেন চরম শঙ্কায়।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, সিলেটে সোমবার বৃষ্টিপাত অনেকটা কমে এসেছে। এদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তিনি জানান, ১৮ মে পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, ২০ ও ২১ মে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।