সিরিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ আলেপ্পোর আনজারা শহরে দেশটির সেনাবাহিনীর একটি বাসে রকেট হামলা চালিয়েছে সরকারবিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। এতে ১০ জন সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ৯ জন।
সিরিয়ার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রামি আবদেল রহমান এএফপিকে বলেন, আলেপ্পোর আনজারা এলাকায় হামলার শিকার হয়েছে বাসটি। বাসের যাত্রীদের সবাই নিজেদের বাড়ির দিকে রওনা হয়েছিলেন।
হামলাকারীরা অ্যান্টি-গাইডেড রকেট জাতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে বলেও জানিয়েছেন রামি আবদেল রহমান।
সিরিয়ার কট্টর ইসলামপন্থী গোষ্ঠী ও আলেপ্পোর সবচেয়ে বড় সশস্ত্র দল হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস) নিজেদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে ইতোমধ্যে হামলায় পুড়ে যাওয়া সেই বাসের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেছে, তবে সরাসরি সেই হামলার দায় এখন পর্যন্ত স্বীকার করেনি কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন। আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়দা নেটওয়ার্ক থেকে সরে আসা কয়েকজন নেতা গঠন করেছেন এইচটিএস।
এদিকে, এই ঘটনার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সিরিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। তবে তাতে হতাহতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।
সিরিয়ার অপর এক সেনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নিহত এসব সেনা সদস্যদের সবাই শিয়া সম্প্রদায়ের ছিলেন এবং তাদের বাড়ি ছিল নুবল ও জাহরা শহরে।
২০১১ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয় সিরিয়ায়। পাশাপাশি উত্থান ঘটে ইসলামিক স্টেট (আইএস), হায়াত তাহরির আল শামসহ কয়েকটি ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠীর।
সরকারবিরোধী গণতন্ত্রপন্থী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জঙ্গিগোষ্ঠীর তৎপরতার কারণে দ্রুত সিরিয়ার বিশাল অংশের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন প্রেসিডেন্ট বাশার। ২০১৫ সালে দেশের পাঁচ ভাগের চার ভাগই দখল করে নেয় সরকার বিরোধীরা।
ওই বছরই বাশার আল আসাদকে সামরিক সহায়তা দেওয়া শুরু করে রাশিয়া ও ইরান। এবং এই দুই দেশের সহযোগিতায় ফের দেশের বেশিরভাগ অংশে নিজের কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সক্ষম হন বাশার আল আসাদ।
বর্তমানে একমাত্র দেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ইদলিবের একটি বড় অংশ ও পার্শ্ববর্তী আলেপ্পো, হামা ও লাটাকিয়া প্রদেশে টিকে আছে সিরিয়ার সরকারবিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠী। ২০২০ সালে সরকার ও এসব গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিও হয়েছে।
সেই চুক্তির পর এই প্রথম সিরিয়ার সেনাবাহিনী লক্ষ্য করে বড় কোনো হামলা ঘটল।
সূত্র: রয়টার্স, এএফপি