রাজশাহীতে আম পড়ার সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। ১৩ মে থেকে বাগান থেকে আম নামাতে পারবে চাষি ও ব্যবসায়ীরা। এদিন থেকে গুটি জাতের আম নামতে পারবেন তারা। তবে প্রশাসনের নির্ধারিত সময়ের আগেই পরিপুষ্ট গুটি আম গাছ থেকে নামাতে দেখা গেছে তাদেরকে।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) বিকেলে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বৈঠক শেষে এই মৌসুমের আম পাড়ার সময়সীমা নির্ধারণ করে জেলা প্রশাসন।
অপরিপক্ব আম বাজারজাত ঠেকাতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হক।
সভায় জানানো হয়, ১৩ মে থেকে গুটি আম নামাবেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। এছাড়া ২০ মে থেকে গোপালভোগ, ২৫ মে থেকে লক্ষণভোগ, লক্ষণা এবং রাণীপছন্দ, ২৮ মে থেকে হিমসাগর, ক্ষীরশাপাত, ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে আম্রপালি ও ফজলি, ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা ও বারি আম-৪, ১৫ জুলাই থেকে গৌরমতি ও ২০ আগস্ট থেকে ইলামতি আমা পাড়তে পারবে চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
ওই বৈঠকে অংশ নিয়ে রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, “বিষমুক্ত ও নিরাপদ আম নিশ্চিত করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যদি বেঁধে দেওয়া সময়ের আগে আম পেকে যায় তবে স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করে চাষি ও ব্যবসায়ীরা আম পাড়তে পারবেন। কিন্তু অপরিপক্ব আম নামানোর সুযোগ নেই। কেউ অপরিপক্ব আমে কেমিক্যাল মিশিয়ে বাজারজাত করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলিম উদ্দিন বলেন, “সাধারণত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে রাজশাহীর আম পাকতে শুরু করে। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না। বিষয়টি মাথায় রেখেই আম বাজারজাতের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শরিফুল হক বলেন, “আমবাগান থেকে শুরু করে বাজার পর্যন্ত পুরোটাই নজরদারিতে রাখবে জেলা প্রশাসন। প্রত্যেক উপজেলায় আলাদা কমিটি করে বিষয়গুলো তদারকি করা হবে। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমও চলবে।”
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হকের সভাপতিত্বে সভায় আম চাষি, বাগান মালিক, আম ব্যবসায়ী, রপ্তানিকারক, গবেষক, কৃষি কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন জানান, রাজশাহীতে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১২ মেট্রিক টন ফলন হয়। অর্থাৎ ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে ২ লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টন আম হয়। আর সে অনুযায়ী চলতি মৌসুমে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা সেটিই নির্ধারণ করা হয়েছে।
রাজশাহীতে আমের সবচেয়ে বড় মোকাম বানেশ্বর হাট। বানেশ্বরের আমের আড়তদার আবদুল আউয়াল বলেন, “গোপালভোগ আর গুটি জাতের আম একসঙ্গে বাজারে আসে। আমরা বাগান কিনে রেখেছি। সব ধরনের আমের ব্যবসা করার অভিজ্ঞতা আছে। চলতি মাসের ২৫ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে গোপালভোগ বাজারে আসবে বলে আশাবাদী।”