শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে, তার ছেলে ও সাবেক যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নামাল রাজাপাকসেসহ পরিবারের ১৫ জন সদস্যকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন কলম্বোর একটি আদালত।
এছাড়া গত ৯ মে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন টেম্পল ট্রিজে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলার ঘটনাটির তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই সংঘাতের জেরেই পুরো শ্রীলঙ্কায় বিক্ষোভ উত্তাল হয়ে উঠেছিল।
বৃহস্পতিবার কলম্বোর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই আদেশ দেন বলে জানিয়েছে এএফপি।
আদালতের এক কর্মকর্তা জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, টেম্পল ট্রিজের সামনে সংঘাতের তদন্ত ও অবিলম্বে তার গ্রেপ্তার চেয়ে আদালতে একটি পিটিশন জমা পড়ে। সেই পিটিশনে প্রথম দু’টি দাবি মেনে নিলেও তৃতীয়টি ‘অপ্রয়োজনীয়’ উল্লেখ করে খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
‘আদালত বলেছেন, যেহেতু তিনি (মাহিন্দা) ও তার পরিবারের সদস্যরা দেশে আছেন এবং প্রহরার মধ্যে রয়েছেন, তাই গ্রেপ্তার আদেশ নিষ্প্রয়োজন,’— এএফপিকে বলেন ওই কর্মকর্তা।
ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে গত ৯ মে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান শ্রীলঙ্কার প্রভাবশালী রাজাপাকসে পরিবারের সর্বজেষ্ঠ্য সদস্য মাহিন্দা রাজাপাকসে; কিন্তু তিনি পদত্যাগ পত্র জমা দেওয়ার আগে তার সরকারি বাসভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায় সরকার সমর্থকদের একটি দল।
এই ঘটনার পর পুরো শ্রীলঙ্কা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। দেশজুড়ে পুলিশ ও সরকার সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলে বিক্ষোভকারীদের। দু’দিন ধরে চলা এই সংঘাতে নিহত হন সাত জন, আহত হন আরও তিন শতাধিক।
আহতদের অন্তত ২২৫ জন বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সন্ন্যাসিরাও রয়েছেন।
সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টারে গত ১০ এপ্রিল ভোরে সপরিবারে কলম্বোর সরকারি বাসভবন ত্যাগ করেন মাহিন্দার রাজাপাকসে। শ্রীলঙ্কার উত্তরপূর্বাঞ্চলের উপকূলীয় শহর ত্রিনকোমালিতে নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে বর্তমানে অবস্থান করছেন তারা।
মাহিন্দার ছেলে নামাল রাজাপাকসে এএফপিকে জানিয়েছেন, দেশ ত্যাগের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।