ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি স্কুলে চালানো রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বোমা হামলায় ৬০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রোববার (৮ মে) রাতে দেওয়া এক বার্তায় তিনি একথা জানান।
সোমবার (৯ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এর আগে রোববার দুপুরে স্কুলটিতে বোমা হামলা চালায় রাশিয়া। হামলার পরপরই প্রায় ৬০ জনের মৃত্যুর আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ।
হামলার পরপরই লুহানস্ক অঞ্চলের গভর্নর সেরহি হাইদাই রোববার বলেন, বিলোহোরিভকা এলাকার একটি স্কুলে রাশিয়ার বোমা হামলার পর ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা কয়েক ডজন মানুষ সম্ভবত মারা গেছেন।
সেরহি হাইদাই আরও জানান, বিলোহোরিভকার ওই স্কুল ভবনে ৯০ জন লোক আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং হামলার পর তাদের মধ্যে কেবল ৩০ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। নিজের টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে রোববার দেওয়া এক বার্তায় তিনি জানান, ‘হামলার পর স্কুল ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে ৬০ জন আটকা পড়েছেন এবং সম্ভবত তাদের সবাই প্রাণ হারিয়েছেন।’
সেরহি হাইদাই আরও বলেন, জরুরি সেবার কর্মীরা ৩০ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন। তাদের মধ্যে সাতজন আহত হয়েছেন। লুহানস্ক অঞ্চলের গভর্নরের এই দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে আলজাজিরা তাৎক্ষণিকভাবে জানালেও প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি পরে ৬০ জন নিহতের কথা জানান।
অবশ্য এই হামলার বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি রাশিয়া।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
মস্কো অবশ্য ইউক্রেনে তাদের এই আগ্রাসনকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে আখ্যায়িত করছে। রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেনকে নিরস্ত্র করা এবং পশ্চিমাদের উস্কে দেওয়া রুশ-বিরোধী জাতীয়তাবাদ থেকে দেশটিকে মুক্ত করতেই এই অভিযান চলছে বলেও দাবি করেছে রাশিয়া।
প্রায় আড়াই মাস ধরে চলা এই সামরিক অভিযানে রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের সামরিক-বেসামরিক বহু অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উঠছে বেসামরিক প্রাণহানির অভিযোগও। যদিও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করেই হামলা চলছে বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।