মাতৃ দিবস আজ (৮ই মে, ২০২২)। প্রত্যেক দিনই মায়ের দিন। তবু বিশেষ দিনটিতে বিশ্বজুড়ে মাতৃ দিবসের সারম্বর উদযাপন। মায়ের কথা লেখা যায় না। অসংখ্য কথা, ঘটনা ভিড় করে আসে। কোনটা লিখি, কী লিখি খেই হারিয়ে যায়। মায়ের ভালবাসা অপার। প্রথম শিক্ষক মা। প্রথম পৃথিবী পাঠ মায়ের কোলে চেপেই। প্রথম কানমলা, চপেটাঘাত মায়ের হাতেই। আজকের বিশেষ দিনে মনে পড়ল আরেকটি বিষয়। ‘মাতৃচুম্বন।’
চুম্বন, চুমু খাওয়া বিষয়টা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে অনেক। যেমন একটা অতি সাধারণ জিজ্ঞাসা-‘চুম্বনের সময়ে যে লালা নিঃসৃত হয়, তার মধ্য দিয়ে এক শরীর থেকে অন্য শরীরে জীবাণু সংক্রমণ হতে পারে কি?’
উত্তর হতে পারে এবং হয়। চুম্বনের মধ্য দিয়ে জীবাণু সংক্রমণ খুবই সাধারণ ঘটনা। পাশ্চাত্য দুনিয়ায় এই বিষয় নিয়ে ঝড় উঠছে জোর। সত্যি, এ বিষয়টাতে সাবধান হওয়া প্রয়োজন।
কিন্তু মা যখন সদ্য জাত বা কয়েক মাসের শিশুকে চুমু খায়- তখন কিন্তু একদমই ভিন্ন ব্যাপার ঘটে। অদ্ভুত বিস্ময় প্রকৃতির। কেমন ব্যাপার? সদ্যজাতকে মা চুমু খেলে বাচ্চার মুখের বা গাল কিম্বা ঠোঁটের জীবাণু মায়ের শরীরে ঢুকে যায়। তারপর? তারপর মায়ের শরীরে লিম্ফয়েড যন্ত্রে (যেমন টনসিল) জীবাণু গুলোর প্রক্রিয়াকরণ শুরু হয়। লিম্ফয়েড যন্ত্রে মেমারি বি কোষের সংস্পর্শে আসে তারা। তখন এক অদ্ভুত ব্যাপার ঘটে। তৈরি হয় জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিষেধক (অ্যানটিবডি)। তারপর মায়ের বুকের দুধের মধ্যদিয়ে সেই অ্যানটিবডি সন্তানের শরীরে প্রবেশ করে। সন্তানকে অনেক জীবাণু আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
তবে এই প্রক্রিয়া কেবল সদ্যজাত আর তার মায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ। অর্থাৎ পিতা-পিতামহ, মাসী-পিসী কারুর চুম্বনেই সদ্যোজাত বা পাচ-ছয় মাস বয়সী শিশুর শরীরে জীবাণু আক্রমনের প্রতিষেধক তৈরি হবে না। প্রাণী কূলে অন্য স্তন্য পায়ীদের ক্ষেত্রেও আছে এমন ব্যাপার।
অদ্ভুত বিস্ময় প্রকৃতির। প্রসঙ্গক্রমে, আরেকটি বিস্ময়ের কথা। মেয়ে যখন মা হয়, তখন মস্তিষ্কের কোষে তৈরি হয় এক হরমোন, অক্সিটোসিন। মস্তিস্ক থেকে রক্তের মধ্য দিয়ে শরীরে নেমে আসে। অক্সিটোসিন মাতৃত্বের অণু। অনেক ধরনের কাজ করে। সঙ্গে সন্তানকে বিশ্বাস ভালোবাসা আদরে ভরিয়ে দেবার সঙ্কেত সৃষ্টি করে অক্সিটোসিন হরমোন, মাতৃত্বের অণু।