ইউক্রেনের ভূখণ্ডে দেশটির সঙ্গে লড়াই করছে রাশিয়া। অন্যদিকে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে রাশিয়ার চলছে অর্থনৈতিক লড়াই। এই লড়াইয়েরই সর্বসাম্প্রতিক পদক্ষেপ হিসেবে বুধবার (২৭ এপ্রিল) পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় রাশিয়ার গ্যাজপ্রম।
আর এতেই অনেকটা চাপে পড়ে গেছে সমগ্র ইউরোপ। পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ বন্ধের পদক্ষেপকে ব্ল্যাকমেইল বলে দাবি করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলছে, পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়াতে গ্যাস রপ্তানি বন্ধ করার বিষয়ে রাশিয়ার নেওয়া সিদ্ধান্ত ‘ব্ল্যাকমেইলের হাতিয়ার’। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন বলেছেন, মস্কোর এই পদক্ষেপ সরবরাহকারী হিসেবে রাশিয়ার ‘অবিশ্বস্ততা’ সামনে এনেছে।
অবশ্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারি বাসভবন ও কার্যালয় ক্রেমলিন দাবি করেছে, পশ্চিমা দেশগুলোর ‘অবন্ধুসুলভ পদক্ষেপের’ কারণে রাশিয়া এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। ইউরোপ তার গ্যাস চাহিদার এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি মেটানোর জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। এছাড়া রাশিয়ার এই গ্যাস পাইপলাইনের ওপর একচেটিয়া কর্তৃত্ব রয়েছে কেবল রুশ রাষ্ট্রীয় জ্বালানি জায়ান্ট গ্যাজপ্রম’র।
বুধবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে উরসুলা ভন ডার লেইন বলেন, গ্যাস সরবরাহ বন্ধের বিষয়ে গ্যাজপ্রমের এই পদক্ষেপ ‘অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য’। কিন্তু তিনি জোর বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ‘এই দৃশ্যের জন্য প্রস্তুত’ ছিল। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মিত্র ও অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে এ বিষয়ে একটি ‘তাৎক্ষণিক, ঐক্যবদ্ধ এবং সমন্বিত’ পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করবে ইইউ।
এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০টি ইউরোপীয় জ্বালানি সংস্থা রুশ গ্যাসের জন্য গ্যাজপ্রমকে রুবেলে অর্থ পরিশোধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে এবং চারটি জ্বালানি সংস্থা ইতোমধ্যেই তা করেছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট এই ধরনের কোনো পদক্ষেপেরও সমালোচনা করেন।
উরসুলা ভন ডার লেইন বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ‘উচ্চ ঝুঁকি’ সৃষ্টি করবে এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে আমাদের ‘আরোপিত নিষেধাজ্ঞার লঙ্ঘন’ করবে। তার ভাষায়, ‘আমাদের নির্দেশনা এখানে খুবই স্পষ্ট।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দাবি, জ্বালানি সরবরাহের জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল ইউরোপীয় দেশগুলো যেন রুশ মুদ্রা রুবেলে প্রাকৃতিক গ্যাসের জন্য অর্থ পরিশোধ করে। তবে পুতিনের এই দাবি মানতে রাজি নয় ইইউ। অবশ্য হাঙ্গেরি গ্যাজপ্রমের সাথে একটি সমাধান চুক্তিতে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।