প্রথমবারের মতো মানবদেহে এভিয়ান ফ্লু’র এইচ৩এন৮ শনাক্তের দাবি করেছে চীন। তবে দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলেছে, মানুষের মধ্যে ব্যাপক হারে এই রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি কম।
২০০২ সালে উত্তর আমেরিকার জলচর পাখির দেহে প্রথম আবিষ্কার করা হয় এইচ৩এন৮। এ পর্যন্ত ঘোড়া, কুকুর এবং সিলের শরীরে ফ্লুটি সংক্রমিত হলেও মানুষের মধ্যে এর আগে শনাক্ত করা হয়নি।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) বলেছে, কেন্দ্রীয় হেনান প্রদেশে বসবাসকারী একটি চার বছর বয়সী একটি শিশু এ মাসের শুরুতে জ্বর এবং অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরে তার নমুনা পরীক্ষায় বার্ড ফ্লুতে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।
জানা গেছে, ছেলেটির পরিবার বাড়িতে মুরগি পালন করত এবং বুনো হাঁস চড়ে বেড়ায় এমন এলাকায় পরিবারটি থাকে।
ছেলেটি সরাসরি পাখি দ্বারা সংক্রমিত হয়েছিল তবে, “মানুষকে কার্যকরভাবে সংক্রামিত করার ক্ষমতা” পাওয়া যায়নি বলে কমিশন বলেছে।
ছেলেটির ঘনিষ্ঠ মানুষদের নমুনা পরীক্ষায়ও কোনো অস্বাভাবিকতা পাওয়া যায়নি।
কমিশন বলছে, এটি একটি ক্রস-প্রজাতির সংক্রমণ এবং বড় আকারের সংক্রমণের ঝুঁকি কম। তবুও মৃত বা অসুস্থ পাখি থেকে দূরে থাকতে এবং জ্বর বা শ্বাসকষ্টের লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রধানত বন্য পাখি এবং হাঁস-মুরগির মধ্যেই সংক্রমণ ঘটে। তবে মানুষের মধ্যে সংক্রমণের ঘটনা অত্যন্ত বিরল।
ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অনুসারে, বার্ড ফ্লুর এইচ৫এন১ এবং এইচ৭এন৯ ধরন দুটি যথাক্রমে ১৯৯৭ এবং ২০১৩ সালে শনাক্ত করা হয়েছিল। এই ধরন দুটি এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে মানুষের অসুস্থতার জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দায়ী।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, জুনোটিক বা পশুবাহিত ইনফ্লুয়েঞ্জার মানুষের সংক্রমণ প্রাথমিকভাবে সংক্রমিত প্রাণী বা দূষিত পরিবেশের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে হয়, কিন্তু মানুষের মধ্যে এই ভাইরাসগুলোর কার্যকর সংক্রমণের ফলে হয় না।
২০১২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্ব উপকূলে ১৬০টিরও বেশি সিলের মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয়েছিল এইচ৩এন৮ বার্ড ফ্লুকে। সে সময়ে এটি প্রাণীদের মধ্যে মারাত্মক নিউমোনিয়া সৃষ্টি করেছিল।