আরও ৩২ হাজার ৯০৪টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের বাড়ির মালিকের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার সরকারি খরচে নির্মিত এসব বাড়ি হস্তান্তর করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী ঈদ-উল-ফিতরের আগে তার উপহার হিসেবে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের সুবিধাভোগীদের ২ দশমিক ২ শতাংশ জমিতে নবনির্মিত টিনশেড আধা-পাকা ঘরের দলিল ও চাবি বিতরণ করেন।
শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
চারটি জেলার চারটি স্থানে সংযোগকারী কিছু সুবিধাভোগী এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগীদের উন্নত জীবনমান নিয়ে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
মুজিববর্ষে সারাদেশের প্রতিটি ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে আবাসন সুবিধার আওতায় আনার সরকারি অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় তিন ধাপে দেড় লাখ ২৩৩টি বাড়ি হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রথম ধাপে ২০২১ সালের২৩ জানুয়ারি ৬৩ হাজার ৯৯৯টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার ঘর পেয়েছে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে গত বছরের ২০ জুন ৫৩ হাজার ৩৩০ পরিবার তাদের মাথার ওপর ছাদ পেয়েছে।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় ধাপের আওতায় সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মধ্যে আরও ৬৫ হাজার ৬৭৪টি ঘর বিতরণের পরিকল্পনা করেছে সরকার।
এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই ৩২ হাজার ৯০৪টি বাড়ি হস্তান্তর করেছেন। সারাদেশে ৪৯২টি উপজেলায় বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, এ পর্যন্ত প্রকল্পের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে এক লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে এবং চলতি অর্থবছর পর্যন্ত এক লাখ ৮৩ হাজার তিনটি বাড়ি বরাদ্দ করা হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন, গৃহহীন, প্রান্তিক ও উৎপাটিত পরিবারের স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে জমি ও বাড়ির মালিকানা দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিটে দুটি কক্ষ, একটি রান্নাঘর, একটি টয়লেট এবং একটি বারান্দা রয়েছে যার মূল্য দুই লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা। ট্যাক্স এবং ভ্যাটসহ এর পরিমাণ তিন লঅখ ৩০ হাজার টাকা।
আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে সরকার ঘরগুলোকে আরও টেকসই এবং জলবায়ু-সহনশীল করতে খরচ বাড়িয়েছে এবং নকশায় পরিবর্তন এনেছে।
বাড়িগুলিকে আরও টেকসই করতে প্রতিটি বাড়ির জন্য খরচ এক লাখ ৯১ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়।
সরকার বাড়িগুলিকে আরও টেকসই করার জন্য শক্তিশালী গ্রেট-বিম, লিন্টেল এবং রিইনফোর্সড কংক্রিট কলাম (আরসিসি) পিলার বিশিষ্ট বাড়িগুলি নির্মাণ করছে।
চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত বাড়ি নির্মাণের জন্য বরাদ্দ হয়েছে তিন হাজার ৯৭২ কোটি সাত লাখ পাঁচ হাজার টাকা।
খাস জমি ছাড়াও গৃহহীন ও ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের জন্য সরকার ১৬৮ দশমিক ৩২ একর জমি কিনেছে। ইতিমধ্যেই জমি কেনার জন্য ১১৫.৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।