ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান গড়িয়েছে তৃতীয় মাসে। পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে চলমান রুশ সামরিক অভিযান বা যুদ্ধের শুরু থেকেই কার্যত অনেকটাই বিপর্যস্ত ইউক্রেন। রুশ সেনাদের জোরদার আক্রমণে ইউক্রেনের বহু শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেসামরিক অবকাঠামোও।
তবে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কথায় অন্য সুর। তার দাবি, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলমান এই যুদ্ধে জিততে পারবে না রাশিয়া। মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া তার দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জিততে পারবে না। একইসঙ্গে ইউক্রেনে রুশ সৈন্যদের উপস্থিতি ‘অসহনীয়’ করে তুলতে দেশটির নাগরিকদের সবকিছু করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, রাশিয়া যুদ্ধে পরাজিত হবে। কিন্তু সেটি অর্জন করতে হলে ইউক্রেনীয়দের ভাবতে হবে যে, কীভাবে ‘আমাদের ভূখণ্ডে (দখলকারীদের) উপস্থিতি আরও অসহনীয় করে তোলা যায়’।
জেলেনস্কির ভাষায়, ‘ইউক্রেন শান্তির জন্য প্রস্তুত … কিন্তু রাশিয়াকে শান্তির দিকে টেনে আনতে প্রতিটি ইউক্রেনীয় পুরুষ ও নারীকে লড়াই করতে হবে, স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। কারণ লড়াইয়ের প্রতিটি দিন এই যুদ্ধের পর, আমাদের বিজয়ের পর আমাদের শান্তিপূর্ণ জীবনে বছরের পর বছর যোগ করবে।’
এদিকে রাশিয়া ইউক্রেনে ১১০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে জানিয়েছেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। একইসঙ্গে রুশ হামলার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোয় ইউক্রেনীয়দের প্রশংসাও করেন তিনি।
সোমবার রাতে দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘গত দুই মাসে, তারা (রাশিয়া) আমাদের বিরুদ্ধে ১১০০ টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। আর বোমা ও কামান ব্যবহারের ঘটনা গণনাতীত। তারা (মানুষের ওপর) নির্যাতন চালিয়েছে, ডাকাতি করেছে এবং হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। তারা আমাদের ভূখণ্ডে মাইন ছড়িয়ে দিয়েছে। শান্তিপূর্ণ শহর ও গ্রামগুলো নরকে পরিণত হয়েছে।’
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের দাবি, ‘কিন্তু তারা (রাশিয়া) কিছুই অর্জন করতে পারেনি এবং কিছুই অর্জন করতে পারবেও না। এই যুদ্ধটি ‘ইউক্রেনের গণমানুষের যুদ্ধ’ হয়ে উঠেছে। সকল ইউক্রেনীয় নারী ও পুরুষ রাষ্ট্রের জন্য সমানভাবে দাঁড়িয়েছে।’