খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ, লেখক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল হত্যাচেষ্টা মামলার রায়ে প্রধান আসামি মো. ফয়জুল হাসানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সেই সঙ্গে এ মামলায় অপর আরেক আসামি ফয়জুলের বন্ধু মো. সোহাগ মিয়াকে ৪ বছরের কারাদণ্ড এবং পরিবারের বাকী চার সদস্যকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ নূরুল আমীন বিপ্লব এ মামলার রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত এ সময় ফয়জুলকে ২০ হাজার টাকা এবং সোহাগকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
খালাস পাওয়া ৪ আসামি হলেন- ফয়জুলের বাবা আতিকুর রহমান, মা মিনারা বেগম, মামা ফজলুর রহমান ও ভাই মো. এনামুল হাসান।
আদালতের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি মমিনুর রহমান টিটু জানান, এ মামলার ৬২ সাক্ষীর মধ্যে ৩৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে গত ১০ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেন আদালত। এরপর গত ২১ ও ২২ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩ মার্চ বিকেলে শাবি’র হ্যান্ডবল গ্রাউন্ড সংলগ্ন মুক্তমঞ্চে এক অনুষ্ঠান চলাকালে মঞ্চে বসা অধ্যাপক জাফর ইকবালকে পেছন থেকে মাথায় ছুরিকাঘাত করে মো. ফয়জুল হাসান।
হামলাকারী ফয়জুলকে ঘটনাস্থল থেকেই আটক করে ছাত্র-শিক্ষকরা। তারপর তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করা হয়।
গুরুতর আহত অধ্যাপক জাফর ইকবালকে প্রথমে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরবর্তীতে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরদিন শাবি’র রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন বাদী হয়ে সিলেটের জালালাবাদ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন।
তদন্ত শেষে সে বছর ৬ মে ফয়জুলকে প্রধান আসামি করে মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রের আলোকে একই বছরের ৪ অক্টোবর এই ৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গঠন করেন আদালত। পরে ২০২০ সালে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলে মামলাটি এই ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।