চলতি সপ্তাহে দ্বিতীয় বারের মতো গাজা উপত্যকার মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে হামলা চালানো হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, গাজায় রকেট ইঞ্জিন তৈরিতে ব্যবহৃত একটি ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে তাদের যুদ্ধবিমান।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে গাজায় এই বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তবে হামলায় কোনও হতাহত হয়েছে কি-না তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, ইসরায়েলের বিমান হামলায় গাজার মধ্যাঞ্চলের আল-বুরেইজি শরণার্থী শিবিরে কয়েকটি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে গাজা উপত্যকা থেকে ছোড়া একটি রকেট ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানে। এতে সেখানকার একটি বাড়ি সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে হামলায় কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, অবরুদ্ধ উপকূলীয় উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলার পর গাজা থেকে পরবর্তীতে আরও চারটি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এসব রকেট আটকে দিয়েছে।
তবে ফিলিস্তিনের কোনও সংগঠন এখন পর্যন্ত ইসরায়েল লক্ষ্য করে চালানো রকেট হামলার দায় স্বীকার করেনি। এক বিবৃতিতে গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী হামাস বলেছে, ইসরায়েলের বোমা হামলা কেবল দখলদারির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলন জোরদারে উৎসাহ জোগাবে এবং জেরুজালেম ও ফিলিস্তিনি জনগণের মাঝে তাদের সমর্থন আরও বাড়াবে।
গত শুক্রবার জুমআর নামাজের সময় আল-আকসা মসজিদে ঢুকে গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করে ইসরায়েলি বাহিনী। গত ২০ বছরের বেশি সময় পর এই মসজিদ চত্বরে মাত্র এক ঘণ্টার অভিযানে ৩ শতাধিক মানুষকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১৫৮ ফিলিস্তিনি আহত হন।
শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, মসজিদ এলাকায় ইসরায়েলি পুলিশ টিয়ার গ্যাস এবং স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করছে। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ে মারছে।
কট্টর-ডানপন্থি ইহুদি গোষ্ঠী রিটার্ন টু টেম্পল মাউন্ট ইহুদি ধর্মীয় রীতি মেনে কেউ আল-আকসা মসিজদের ভেতরে ছাগল কোরবানি দিতে পারলে নগদ অর্থ পুরস্কার দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়। কট্টরপন্থি এই গোষ্ঠীর এমন ঘোষণার পর মসজিদ চত্বরে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইহুদিদের উত্তেজনা দেখা দেয়।
সম্প্রতি ইসরায়েল এবং অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সেখানে ব্যাপক সংঘাত তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত বছর গাজায় ১১ দিনের ইসরায়েলি হামলা ২৫০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি এবং গাজার পাল্টা হামলায় ইসরায়েলে ১৩ জনের প্রাণহানি ঘটে।