টানা প্রায় দুই মাস ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। রুশ সেনাদের তীব্র হামলায় পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় সামরিক সহায়তা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ সামরিক জোট ন্যাটো। তবে মার্কিন নেতৃত্বাধীন এই সামরিক জোটটির বিরুদ্ধে ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে চাওয়ার অভিযোগ তুলেছে তুরস্ক।
দেশটির অভিযোগ, রাশিয়াকে দুর্বল করার জন্য ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে চায় ন্যাটোর কিছু সদস্য দেশ। বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বুধবার (২০ এপ্রিল) সংবাদমাধ্যম সিএনএন তুর্ক’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু বলেন, ‘সামরিক জোট ন্যাটোর মধ্যে এমন কিছু দেশ রয়েছে যারা চায় ইউক্রেনে যুদ্ধ চলতে থাকুক। তারা চায় (যুদ্ধের মাধ্যমে) রাশিয়া দুর্বল হয়ে যাক।’
অবশ্য ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে বিভিন্ন সময়ে মস্কো ও কিয়েভের প্রতিনিধিরা আলোচনা করেছেন। গত মাসে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে রুশ ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিরা সর্বশেষ মুখোমুখি আলেচনায় বসেছিলেন। তবে এখন এই আলোচনা চলছে অনলাইনভিত্তিক।
এই পরিস্থিতিতে ন্যাটোর কিছু সদস্য দেশের বিরুদ্ধে ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার অভিযোগ তুলল তুরস্ক। অবশ্য তুরস্ক নিজেও ন্যাটোর সদস্য এবং ন্যাটোভুক্ত কোন দেশগুলো এখনই ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান চায় না সে বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারি বাসভবন ও কার্যালয় ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বুধবার বলেছেন, আলোচনায় ইতোমধ্যে (মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে) ঐক্যমত হওয়া বিষয়গুলো থেকে সরে যাচ্ছে ইউক্রেন।
এএফপি বলছে, ন্যাটোর সদস্য দেশ হিসেবে রুশ আগ্রাসন মোকাবিলায় ইউক্রেনকে কমব্যাট ড্রোন দিয়েছে তুরস্ক। তবে পশ্চিমা অন্য দেশগুলোর মতো রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক বা অন্য কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপের মতো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি দেশটি।
মূলত রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক রয়েছে তুরস্কের। আর তাই বন্ধুপ্রতীম এই দুই দেশের যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্ততা করছে আঙ্কারা। একইসঙ্গে উভয় দেশের দুই শীর্ষ নেতার একটি বৈঠকও আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে দেশটি।