উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের প্রভাব পদ্মায় নদীতেও পড়েছে। এতে প্লাবিত হচ্ছে ফরিদপুরের চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে গেছে এখানকার প্রায় হাজার হেক্টর পাকা ধান, ফলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকরা।
বর্তমানে পদ্মার পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২.৩৬ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকোশলী পার্থ প্রতিম সাহা।
পদ্মা নদীতে গত কয়েকদিন ধরে উজানের পানি আকস্মিক বৃদ্ধির ফলে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা চরাঞ্চলের কৃষি জমিতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।এখানকার প্রায় এক হাজার একর জমির পাকা বোরো ধান ও আউশ ধান পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়েছে।
গত শীত মৌসুমের পৌষ মাসে উপজেলার বিভিন্ন চর এলাকার নিম্নাঞ্চলের অল্প পানি জমিতে বোরো ধান রোপন করা হয়। এছাড়া চরাঞ্চলের শত শত একর কর্দমাক্ত জমিতে লেপী আউশ ধান বপন করা হয়। চলতি মাসে এসব ধান পাকতে শুরু করে। কিন্ত আকস্মিক পানি বৃদ্ধির ফলে পদ্মা চরের পাঁচ শতাধিক কৃষকের সোনালী স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে।
সূত্র জানায়, উপজেলার চরঝাউকান্দা ইউনিয়নে পদ্মা চরের চরকল্যানপুর মৌজা, দিয়ারা গোপালপুর মৌজা, চরঝাউকান্দা ও চর মির্জাপুর মৌজার প্রায় ৩০০ একর জমির ধান, চরহরিরামপুর ইউনিয়নে পদ্মা চরের ইন্তাজ মোল্যার ডাঙ্গী গ্রাম, আরজখার ডাঙ্গী ও চর শালেপুর মৌজার প্রায় ৪০০ একর জমির ধান, গাজীরটেক ইউনিয়নের মাঝি ডাঙ্গী, বিন্দু ডাঙ্গী, বঙ্গেশ্বর ডাঙ্গী, জয়দেব সরকার ডাঙ্গী গ্রাম, চরহোসেনপুর মৌজা ও হাজীগঞ্জ মৌজার প্রায় আড়াইশো একর জমির ধান এবং চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নের পদ্মা পারের বালিয়া ডাঙ্গী গ্রাম, ফাজেলখার ডাঙ্গী, এমপি ডাঙ্গী, আ. গফুর মৃধা ডাঙ্গী, কামার ডাঙ্গী ও মাথাভাঙ্গা গ্রামের আরও প্রায় ১০০ একর জমির ধান জোয়ারের পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে।
উপজেলার চরকল্যানপুর মৌজার কৃষক এজিএম বাদল আমিন বলেন, “পদ্মা নদীর জোয়ারের পানি বেড়ে মাত্র তিনদিনে আমার আবাদী সাড়ে ৭ বিঘাত জমির পাকা ধান ডুবে গেছে। সারা বছর যা করেছি, সব শেষ।”
আরেক কৃষক শাহজাহান মুন্সী বলেন, “পানিতে ডুবে যাওয়া ধানগুলো কাটার জন্য সাড়ে তিন হাজার টাকা দিয়ে সাত জন মজুর নিয়েছি, সারাদিন ভরে ডুবিয়ে ডুবিয়ে তারা মাত্র ১৯ আটি পানির নিচের ধান কেটেছে। ধান কাটতে গিয়ে আরও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।”
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, “পদ্মার চরের ক্ষতিগ্রস্থ ফসলের বিবরণী তৈরী করে আমরা উর্ধ্বতন দপ্তরে পাঠিয়েছি।ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের জন্য কোনো বরাদ্দ আসলে তাদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।”