ইউক্রেনে যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার জ্বালানি সম্পদের ওপর নির্ভরতা কমানোর যে সিদ্ধান্ত ইউরোপের দেশসমূহ নিয়েছে, পুরো বিশ্বব্যবস্থায় তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে; এবং ইউরোপই এই সিদ্ধান্তের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হবে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে এই মন্তব্য করেছেন।
ভাষণে পুতিন বলেন, ‘এটা খুবই অবাক করার মতো ব্যাপার যে, আমাদের তথাকথিত (পশ্চিমা) অংশীদাররা নিজেরাই স্বীকার করেছে যে রাশিয়ার গ্যাস ছাড়া তারা চলতে পারবে না।’
‘এবং এটাও সত্য যে, রাশিয়ার পরিবর্তে বিকল্প উৎস থেকে জ্বালানি কেনার যে সিদ্ধান্ত ইউরোপ নিয়েছে, তার ফলে পুরো বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। নিঃসন্দেহে সেই প্রভাব হবে খুবই যন্ত্রণাদায়ক; এবং তার প্রথম ভুক্তভোগী হবে ইউরোপ নিজেই।’
রাশিয়ার জ্বালানির ওপর ইউরোপ ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। ইউরোপের বার্ষিক জ্বালানি গ্যাসের চাহিদার ৪০ শতাংশ সরবরাহ আসে রাশিয়া থেকে। এছাড়া রাশিয়ার কয়লা ও তেলের ওপরও ইউরোপের নির্ভরশীলতা অনেক।
সম্প্রতি ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের জেরে রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইউরোপ। এসব নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রাশিয়ার তেল ও কয়লাও রয়েছে।
গ্যাসের ওপর যদিও এখনও নিষেধাজ্ঞা দেয়নি ইউরোপ, তবে ইউরোপের দেশসমূহের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জানিয়েছে, আগামী ২০২৭ সালের মধ্যে রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানি বন্ধ করবে ইউরোপ।
চলতি বছর থেকেই রাশিয়ার ওপর গ্যাস নির্ভরতা ৬০ শতাংশ কমানোর চেষ্টা করছে ইইউ।
ভাষণে পুতিন বলেন, ‘রাশিয়া যে দামে ইউরোপে প্রতি বছর জ্বালানি সরবরাহ করে, বিশ্বের অন্য কোনো দেশ বা অঞ্চলের পক্ষে এই মুহুর্তে এই দামে জ্বালানি সরবরাহ করা সম্ভব নয়। প্রাথমিকভাবে ইউরোপ জ্বালানির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করছে, তবে যে দামে তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে গ্যাস কিনবে— তা অনেক বেশি। এতটাই বেশি, যে এ কারণে ইউরোপের সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রার মান নেমে যাবে, ইউরোপের অর্থনীতিও সংকুচিত হবে।’
সূত্র: সিএনএন, রয়টার্স