২৩ দিন পর নিজ কর্মস্থলে ফিরেছেন কারামুক্ত শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল। বুধবার (১৩ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে সরকারি হরগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে বিনোদপুর রামকুমার উচ্চবিদ্যালয়ে আসেন তিনি। এ সময় পুলিশ বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে প্রিয় শিক্ষক ফিরে আসায় শিক্ষার্থীরা ও তার সহকর্মীরা উল্লাস প্রকাশ করেছেন।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বলে, হৃদয় মণ্ডল স্যার খুবই ভালো একজন শিক্ষক। তার পাঠদান চমৎকার। তিনি কয়েক দিন বিদ্যালয়ে না থাকায় আমরা তাকে খুব মিস করেছি। তিনি ফিরে আসায় আমরা খুব খুশি হয়েছি। আমরা চাই স্যার আমাদের আগের মতো করে আবারও পাঠদান শুরু করুন।
হৃদয় মণ্ডলের সহকর্মী ও শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক শিক্ষক সজল সূত্রধর বলেন, হৃদয় স্যার ভালো মনের মানুষ ও ভালো শিক্ষক। তার পাঠদানপদ্ধতি আধুনিক। আমি সব সময় তার কাছে অনেক কিছু জানতে চাই। তিনি হাসিমুখে সবকিছু বুঝিয়ে দেন। তিনি গণিত খুব ভালো বোঝে গণিতের খুবই ভালো একজন শিক্ষক।
তবে সেদিন ঘটে যাওয়া ঘটনার তদন্ত কার্যক্রম এখনো চলমান। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) বিভাগ থেকে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সরকারি হরগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হাই তালুকদারকে। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে এ অধ্যক্ষকে।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ আব্দুল হাই তালুকদার বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে আমাকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর আজ এক দিন শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট যারা আছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলব। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদন দাখিল করব।
উল্লেখ্য, গত ২৩ মার্চ মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় বিনোদপুর রামকুমার উচ্চবিদ্যালয়ের গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে আটক করে পুলিশ। পরে মামলা হলে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এর আগে ২০ মার্চ পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।
১৯ দিন কারাভোগের পর ১০ এপ্রিল পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় মুন্সীগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোতাহারাত আক্তার ভূঁইয়া তার জামিন মঞ্জুর করেন।
শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় তিনি কারাগার থেকে বেরিয়ে ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা নেন। আজ তিনি প্রথম নিজ কর্মস্থলে ফিরে আসেন।