ইউক্রেনে চলমান রুশ অভিযানে দেশটির নারীরা রাশিয়া ও ইউক্রেন— উভয় দেশের সেনা সদস্যদের হাতেই ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তর ইউএনএইচআরসির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
সম্প্রতি ইউক্রেনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা লা স্ত্রাদা-ইউক্রেন সম্প্রতি জাতিসংঘ বরাবর লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছে। সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট কাতেরিনা চেরেপাখা অভিযোগে উল্লেখ করেন, ইউক্রেনে অন্তত ১২ জন নারী ও কিশোরী-তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
ধর্ষণের শিকার ওই নারী ও তরুণীদের নাম-বিবরণ অভিযোগে উল্লেখ করে কাতেরিনা আরও বলেন, ‘এটা হচ্ছে পানিতে ভেসে থাকা হিমশৈলের ওপরের অংশ। বাস্তবে রুশ সেনাদের ধর্ষণের শিকার হয়েছেণ এমন নারীদের সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। আগ্রাসনকারী বাহিনীর সদস্যরা ধর্ষণকে তাদের অভিযানের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।’
তবে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিভাগের কর্মকর্তরা জানিয়েছে, ইউক্রেনে যুদ্ধের সুযোগে রুশ ও ইউক্রেনীয়— উভয় বাহিনীর অনেক সদস্য ধর্ষণের ও যৌন সহিংসতার মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন।
কর্মকর্তারা আরও জানান, ইউএনএইচআরসির প্রতিনিধিরা গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চল সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনকালে উভয় দেশের সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ ও নাবালিকা ধর্ষণের প্রমাণ পেয়েছেন তারা।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ইতোমধ্যে বিষয়টি জানানো হয়েছে বলেও রয়টার্সকে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চেয়ে জাতিসংঘের ইউক্রেন প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, কিন্তু তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
তবে রাশিয়ার প্রতিনিধি দিমিত্রি পোলিয়ানস্কি দৃঢ়ভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। রয়টার্সকে এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি, রুশ সেনারা কেবল সামরিক স্থাপনাগুলোতেই হামলা করছে। বেসামরিক লোকজনদের তার আঘাত করছে না।’
বিশ্বের সামনে রাশিয়ার নেতিবাচক ভাবমূর্তি হাজির করতে এই অভিযোগ আনা হচ্ছে উল্লেখ করে পোলিয়ানস্কি বলেন, ‘রুশ সেনাদের বিকৃত ও ধর্ষকামী হিসেবে পরিচিত করানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে এই অভিযোগ আনা হয়েছে।’