আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি চরম নাজুক হওয়া সত্ত্বেও দেশটিতে আফিম ব্যবসা নিষিদ্ধ করেছে তালেবান। তবে অবৈধ এই ব্যবসার উপর নির্ভরশীল লাখ লাখ কৃষকের জন্য সরকার কী করবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
রবিবার (৩ এপ্রিল) তালেবান জানিয়েছে যে, আফগানিস্তানে আফিম গাছ চাষ নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। হিরোইনের মতো নিষিদ্ধ মাদক তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে আফিম ব্যবহার করা হয়।
আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে চাষের মৌসুমে এমন ঘোষণা দিল দেশটির শাসকগোষ্ঠী। এই নির্দেশ অমান্য করা কৃষককে কারাদণ্ড এবং তার উৎপাদন করা আফিম গাছ পুড়িয়ে ফেলা হবে বলেও জানিয়েছেন এক তালেবান মুখপাত্র।
গত বছর আগস্টে তালেবান কাবুল দখলের পর দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা আরও করুণ হয়ে পড়ে। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো সেদেশে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। ফলে চাকরি হারিয়েছেন অনেক সরকারি এবং বেসরকারি কর্মী।
মানবিক সংস্থাগুলো আশঙ্কা করছে, এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে দেশটিতে অনেক মানুষের অভুক্ত থাকতে হতে পারে। কেননা অনেকে খাবার কেনার সামর্থ্য হারাবেন।
এদিকে, আফগান সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজ জানিয়েছে, আফিম নিষিদ্ধ করার পর কৃষকদের জন্য বিকল্প খুঁজতে আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছেন দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী আবদুল সালাম হানাফি।
প্রসঙ্গত, গোটা বিশ্বের মধ্যে আফিমের সবচেয়ে বড় উৎস হচ্ছে আফগানিস্তান। জাতিসংঘের মাদক এবং অপরাধ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে আফিমের চাহিদার ৮০%-এর বেশি আসে এশিয়ার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি থেকে। এই খাত থেকে দেশটির বাৎসরিক আয় ১.৬ বিলিয়ন ইউরো।
উল্লেখ্য, এর আগে ক্ষমতায় থাকার সময় ১৯৯৪ সালের শেষের দিকে আফগানিস্তানে আফিম চাষ নিষিদ্ধ করেছিল তালেবান। তবে ২০০১ সালে মৌলবাদী গোষ্ঠীটিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হয়।