পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব নাকচ হয়ে যাওয়ার পর দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। রোববার জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি অনাস্থা প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়ার পর ইমরান খানের পরামর্শে আইনসভা ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট।
এই পরিস্থিতিতে আগামী তিন মাস অর্থাৎ ৯০ দিনের মধ্যে দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রোববার (৩ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।
এর আগে, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তার এই প্রস্তাব লিখিত আকারে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভিকে জানান তিনি।
রোববার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইমরান খান নিজেই একথা জানান। এরপরই পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি।
জিও নিউজ বলছে, পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় পরিষদে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। পরে সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন দেশটির জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। একইসঙ্গে অনাস্থা প্রস্তাবকে পাকিস্তানের সংবিধানের ৫ নম্বর অনুচ্ছেদের পরিপন্থি হিসাবেও আখ্যা দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, তিনি উদ্বিগ্ন অনেক লোকের কাছ থেকে বার্তা পেয়েছেন। জাতির সামনে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করা হচ্ছে। তার ভাষায়, ‘আমি বলতে চাই, চিন্তা করবেন না, পাকিস্তানে যা হচ্ছে তা আল্লাহ দেখছেন।’
ইমরান বলেন, অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি প্রেসিডেন্টকে চিঠি লিখেছেন। তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রে বিশ্বাসীদের জনগণের কাছে যেতে হবে এবং নির্বাচন হওয়া উচিত যাতে জনগণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে তারা কাকে ক্ষমতায় দেখতে চায়।
রোববার পাকিস্তানের পার্লামেন্টে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। তবে এর আগেই পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কায়সারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে সরকারবিরোধী দলগুলো। আর এ কারণে আজকের অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি।
অধিবেশন শুরুর পরপরই ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেন দেশটির জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান। সংবাদমাধ্যম দ্য ডন বলছে, অধিবেশন শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বলেন, সংবিধানের ৫ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দেশের প্রতি আনুগত্য প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক কর্তব্য। তিনি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের করা আগের দাবিগুলোর কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পদক্ষেপের পেছনে বিদেশি ষড়যন্ত্র ছিল।