রাশিয়ার সামনে তার কোনো প্রতিবেশী দেশ নিরাপদ নয় এবং খুব দ্রুত ইউরোপের স্বাধীনতা হরণ করতে বিশ্বের বৃহত্তম এই দেশটি অভিযান শুরু করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে সুইডেনের আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনে চলমান রুশ অভিযান যদি আমরা ঠেকাতে না পারি, তার অর্থ হলো … রাশিয়ার সব প্রতিবেশী রাষ্ট্রই এখন ঝুঁকিতে আছে।’
‘এখন ইউক্রেনে অভিযান চলাচ্ছে রাশিয়া, খুব দ্রুত ইউরোপেও অভিযান শুরু করবে দেশটি; এবং সেই অভিযানের লক্ষ্য হবে ইউরোপের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া।’
এ প্রসঙ্গে বাল্টিক সাগরে সুইডেনের দ্বীপ গোটল্যান্ডের বিষয়ে সুইডিশ আইনপ্রণেতাদের দৃষ্টি আকর্ষন করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার প্রোপাগান্ডিস্টরা ইতোমধ্যে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে— কীভাবে গোটল্যান্ড দখল করা যায়। যদি রাশিয়া গোটল্যান্ড দখল করতে পারে, সেক্ষেত্রে ওই দ্বীপে তারা অ্যান্টি ডিফেন্স সিস্টেম ও সামরিক ঘাঁটি বসাবে; এবং সেই ঘাঁটির উদ্দেশ্য হবে বাল্টিক অঞ্চলকে নজরদারির মধ্যে রাখা।
ভাষণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোপকে নিষেধাজ্ঞা জারি অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান জেলেনস্কি। পাশাপাশি, ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতির জন্য সুইডেনের সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন তিনি।
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে কেন্দ্র করে ২০০৮ সাল থেকে দ্বন্দ্ব চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। ওই বছরই ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছিল ইউক্রেন। সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী সদস্য’ মনোনীত করার পর আরও বাড়ে এই দ্বন্দ্ব।
ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনকে চাপে রাখতে গত দুই মাস রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো।
কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে আসেনি। উপরন্তু এই দু’মাসের প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে গেছে— যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রুশ বাহিনী।
অবশেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া; এবং তার দু’দিন পর, ২৪ তারিখ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।