ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত ৮৪৭ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে ৬৪ শিশু। এ ছাড়া এ অভিযানে ৭৮ শিশুসহ এক হাজার ৩৯৯ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। শনিবার (১৯ মার্চ) জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচআরসি) বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ৮১৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। পরে শুক্রবার আরও ৩১ জনের মৃত্যু হওয়ায় তা বেড়ে ৮৪৭ জনে দাঁড়ায়। তবে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
জাতিসংঘের সংস্থাটির তথ্যমতে, নিহত এবং আহতদের অধিকাংশই বিমান হামলা এবং গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন। বিমান থেকে ফেলা বোমার আঘাতে যেসব অঞ্চলে বড় এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে হতাহতের সংখ্যা বেশি।
এদিকে, রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার ১৪ হাজার সেনা নিহত হয়েছে। এমন দাবি করেছে ইউক্রেন।
শনিবার (১৯ মার্চ) দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই দাবি করে। বলা হয়, ইউক্রেনে মস্কোর সামরিক অভিযানের প্রথম তিন সপ্তাহে ১৪ হাজার ৪০০ রুশ সেনা নিহত হয়েছে।
এ ছাড়া কিয়েভ আরও দাবি করেছে, সামরিক সরঞ্জামের বিশাল একটা অংশ হারিয়েছে রুশ বাহিনী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ জানায়, ১ হাজার ৪৭০টি সামরিক যান, ৪৫০টি ট্যাংক, ১০০টি যুদ্ধবিমান, ১১২টি হেলিকপ্টার, ১২টি ড্রোন ও ৩টি জাহাজ ধ্বংস করেছে তাদের বাহিনী।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
২৪ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ২৫তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রাশিয়ার বিশাল সেনাবহর। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।