আজ সেই ২০ মার্চ। না একাত্তরের কোনো দিন নয়। ২০১৬। সেদিন পাশবিক হত্যার শিকার হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু। আজ সেই হত্যাকাণ্ডের ছয় বছর পূর্ণ হলো। দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করা এ হত্যা মামলায় ছয় বছরে অগ্রগতি কতটুকু হয়েছে? এই সময়ে তদন্ত কর্মকর্তা বদল হয়েছে পাঁচ বার। দীর্ঘ সময়েও হত্যায় জড়িত কেউ শনাক্ত হয়নি। তদন্তই চলছে এখনো।
ছয় বছরেও তদন্তের অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তনুর পরিবার। পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্যকে হারানোর বেদনায় এখনো কাতর তনুর বাবা-মা ও দুই ভাইসহ স্বজনরা।
২০১৬ সালের ২০ মার্চ। ওইদিন রাতে কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টের পাওয়ার হাউজের অদূরে কালভার্টের ২০-৩০ গজ পশ্চিমে ঝোপ থেকে সোহাগী জাহান তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পরদিন ২১ মার্চ বিকালে তনুর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী ইয়ার হোসেন কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম। এর চার দিন পর ২৫ মার্চ মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবি পুলিশের ওসি একেএম মনজুর আলমকে।
এর পর ১ এপ্রিল থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত তদন্ত করেন সিআইডির কুমিল্লার পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম। ওই বছরের ২৪ আগস্ট চতুর্থ দফায় তদন্ত কর্মকর্তা বদল করা হয়। সিআইডির নোয়াখালী ও ফেনী অঞ্চলের তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার (বর্তমানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) জালাল উদ্দিন আহম্মদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর চার বছর পর গত বছরের ২১ অক্টোবর সিআইডি থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকার সদর দপ্তরে স্থানান্তর করা হয় হত্যামামলাটি। এরপর পিবিআই তিন বার কুমিল্লা সেনানিবাসে এসে মামলার বাদী তনুর বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম ও তাদের ছোট ছেলে আনোয়ার হোসেন ওরফে রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
জিজ্ঞাসাবাদে কী জানতে চাওয়া হয়েছে- এ বিষয়ে তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘কখন তনু ঘর থেকে বের হলো, কোথায় কোথায় পড়াতে যেত। কার বাসায় যেত- এসব প্রশ্ন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পিবিআইয়ের প্রধান পুলিশের ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘সিআইডির কাছ থেকে মামলাটি নিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অনুসন্ধানের এমন কোনো বিষয় আছে কিনা, যা সিআইডি অ্যাড্রেস করেনি, তা যাচাই করা হচ্ছে।’