ইউক্রেনে গুচ্ছবোমা ব্যবহার করছে রাশিয়া বলে দাবি করেছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ। স্থানীয় সময় শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য দেন তিনি। খবর বিবিসির।
জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘আমরা (ইউক্রেনে) গুচ্ছবোমা ব্যবহার করতে দেখেছি। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হয়, এমন নানা ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের তথ্য আমাদের নজরে এসেছে।’
ন্যাটো প্রধান জানান, ইউক্রেনের আকাশকে উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা (নো-ফ্লাই জোন) ঘোষণা করা হবে না ও দেশটিতে ন্যাটোর কোনো সেনা পাঠানো হবে না। তবে ইউক্রেনকে অন্যান্য সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে চলমান হামলা বন্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্টলটেনবার্গ।
এদিকে রুশ হামলা ঠেকাতে সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করা ন্যাটোর সদস্যদেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা। তবে আরও সহায়তার জন্য আরজি জানিয়েছেন তিনি।
ফেসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিওতে ন্যাটো দেশগুলোকে উদ্দেশ করে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,’আমাদের সহায়তা করুন। যদি না করেন, আমি ভয় পাচ্ছি, রাশিয়ার নিষ্ঠুর পাইলটদের ছোড়া বোমার আঘাতে যেসব বেসামরিক ইউক্রেনীয় নিহত হচ্ছেন, তাদের প্রাণহানি ও দুর্দশার দায়ভার আপনাদের নিতে হবে।’
এদিকে শুক্রবারই ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র জাপোরিঝিয়া হামলা চালিয়ে দখল করে নিয়েছেন রুশ সেনারা। আল-জাজিরা জানায়, হামলার পর বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ছয়টি চুল্লির একটিতে আগুন ধরে যায়। পরে অবশ্য আগুন নেভাতে সক্ষম হন ইউক্রেনীয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
জাপোরিঝিয়ায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন পশ্চিমা নেতা। তাদের আশঙ্কা, মস্কোর এমন কর্মকাণ্ড পুরো ইউরোপকে হুমকিতে ফেলবে।
প্রসঙ্গত, প্রায় দুই মাস ধরে ইউক্রেন সীমান্তে ২ লাখ সেনা জড়ো করে রাশিয়া। রাশিয়ার সেনা মোতায়েন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বারবার সতর্কতা দিয়েছিল; কিন্তু বরাবরই রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে।
এরপর গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন।