মাদক আইনে করা মামলায় নিম্ন আদালতে চিত্রনায়িকা পরীমনিসহ তিনজনের বিচার শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (১ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে এ বিচার শুরু হয়। মামলার অপর দুই আসামি হলেন, আশরাফুল ইসলাম দীপু ও কবির হোসেন।
আদালতে এ দিন অভিযোগকারীর জবানবন্দি নেওয়া হয়। পরে আসামি দিপু ও কবিরের আইনজীবী বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগকারীকে জেরা করেন।
এদিকে অসুস্থতার কারণে উপস্থিত হতে না পারায় পরীমনি আইনজীবী শুনানি স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, পরীমনির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনকারী বিচারিক আদালতের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে। হাইকোর্ট শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশ দিতে আজকের দিন ধার্য করেছে।
বিচারক পরীমনির অনুপস্থিতির আবেদন মঞ্জুর করে, আর তার অনুপস্থিতিতে সাক্ষীকে জেরা করার অনুমতি দেন। আসামিপক্ষ আংশিকভাবে সাক্ষীদের জেরা করে এবং পরবর্তী তারিখে পুনরায় জেরা করার জন্য সময় চান। পরে বিচারক মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ২৯ মার্চ দিন ধার্য করেন।
গত ৫ জানুয়ারি চিত্রনায়িকা পরীমনিসহ তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে আদালত পরীমনিসহ তিন জনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন নামঞ্জুর করেন।
২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর মাদক আইনে করা মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমণিসহ তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নেয় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত। সেই সঙ্গে চার্জ গঠনের জন্য দিন ধার্য করে মামলাটি বিশেষ জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়।
গত বছরের ৪ আগস্ট রাজধানীর বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। পরে তাকে গুলশান থানায় করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত ৩১ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন পরীমনির জামিন মঞ্জুর করে।
এ মামলায় ৪ অক্টোবর পরীমনিসহ তিন জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অভিযোগপত্র দাখিলের পর ১০ অক্টোবর পরীমনি ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির হয়ে পুনরায় জামিন নেন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, পরীমনির বাসা থেকে জব্দ করা মাদকদ্রব্যের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে সিআইডিকে জানানো হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পরীমনির নামে মদজাতীয় পানীয় সেবনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। ওই লাইসেন্সের মেয়াদ আগেই শেষ হয়ে গেছে। পরীমনি এ মামলার দুই আসামি আশরাফুল ইসলাম ও কবির হোসেনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধ মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে বাসায় রেখেছিলেন। মাদকদ্রব্য রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। পরীমনি তার গাড়িটি মাদকদ্রব্য বহনের কাজে ব্যবহার করতেন।