ইউক্রেনে হামলার কারণে আসন্ন কাতার ২০২২ বিশ্বকাপসহ সব আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতা থেকে রাশিয়াকে নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ব ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা ফিফা ও ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা। সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতির মাধ্যমে এ কথা জান জানিয়েছে বিশ্ব ফুটবলের প্রভাবশালী সংগঠন দুটি।
সংস্থা দুটি এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাশিয়া জাতীয় দল এবং রাশিয়ান ক্লাবগুলোকে ফিফা এবং উয়েফার সব ধরনের প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ফুটবল এখানে সম্পূর্ণভাবে ঐক্যবদ্ধ এবং ইউক্রেনে ক্ষতিগ্রস্ত সব মানুষের সঙ্গে সম্পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করেছে। ফিফা সভাপতি জিয়ানি ইনফ্যান্টিনো এবং উয়েফা সভাপতি আলেকসান্ডার সেফেরিন আশা করছেন, ইউক্রেনের পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে এবং দ্রুত উন্নতি করবে যাতে ফুটবল আবার মানুষের মধ্যে ঐক্য ও শান্তির জন্য একটি সেতুবন্ধন হতে পারে।
এর ফলে উয়েফার ইউরোপীয় ক্লাব প্রতিযোগিতাগুলোতেও রাশিয়ান ক্লাবগুলো অংশ নিতে পারবে না।
ফিফার নিশেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়ার আগামী বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা প্রশ্নের মুখে পড়লো। সূচি অনুযায়ী আগামী ২৪ মার্চ পোল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্লে অফে খেলার কথা ছিল রাশিয়ার। ওই ম্যাচ জিতলে ২৯ মার্চ ঘরের মাঠেই তারা চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে মুখোমুখি হতো। কিন্তু তারা রাশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি জানায়।
এছাড়া, জুলাইয়ে অনুষ্ঠেয় ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে রাশিয়ার নারী দলের খেলা হচ্ছে না।
এদিকে, উয়েফার নিষেধাজ্ঞার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রুশ ক্লাব স্পার্তাক মস্কো। ইউরোপা লিগের শেষ ষোলোতে জার্মান ক্লাব লাইপজিগের মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল তাদের। কিন্তু সে ম্যাচ মাঠে গড়াবে কি-না, সেটিই এখন অনিশ্চিত।
এ নিষেধাজ্ঞার কারণে শুধু যে রাশিয়ান ক্লাবগুলোই ভুক্তভোগী হয়েছে তা নয়। রুশ কোম্পানি গ্যাজপ্রমের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে উয়েফা। উয়েফার সবচেয়ে বড় ক্লাব প্রতিযোগিতা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের অন্যতম স্পন্সর ছিল প্রতিষ্ঠানটি।
তবে ফিফা এবং উয়েফার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করে এর বিরুদ্ধে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া ফুটবল ইউনিয়ন (আরএফইউ)।
এক বিবৃতিতে আরএফইউ জানায়, ফিফা ও উয়েফার ক্লাব ও আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে রাশিয়াকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তটি রুশ ফুটবল ইউনিয়ন কোনোভাবেই সমর্থন করবে না। আমাদের বিশ্বাস তাদের এ সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার নিয়ম-নীতি ও স্পোর্টিং স্পিরিটের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না। অ্যাথলেট, কোচ, কর্মকর্তা, ক্লাব, জাতীয় দল ও রাশিয়ার বাইরের লাখো সমর্থকদের জন্য এটা স্পষ্টতই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা বিশ্ব ক্রীড়া সম্প্রদায়ের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করে, যা সবসময় রাজনীতির তুলনায় সাম্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং স্বাধীনতার নীতিগুলো বেশি মেনে চলে। আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আইন অনুসারে আমদের ফিফা এবং উয়েফার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করার অধিকার রয়েছে।