জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর ৫০ বছর পূর্তিতে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের উদ্যোগে বাংলাদেশ-ভারত পঞ্চম সাংস্কৃতিক মিলনমেলা শুরু হয়েছে। শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় অতিথিরা রাজশাহীতে এসেছেন। রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহযোগিতায় রাজশাহী কলেজ মাঠে এই মেলা শুরু হয়েছে।
শুক্রবার বিকাল ৫টায় মেলার উদ্বোধন করেন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহীর মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। উদ্বোধন শেষে মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন সিটি মেয়র। মেলায় বিভিন্ন পণ্যের ৩৫টি স্টল স্থান পেয়েছে।
এ সময় সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সাংস্কৃতিক মিলনমেলাকে কেন্দ্র করে এই পণ্যমেলার আয়োজন করা হয়েছে। এজন্য কোনও স্টলের কাছ থেকে সিটি করপোরেশন ট্যাক্স নেয়নি। এখানে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী যেসব পণ্য আছে সবগুলো প্রদর্শিত করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে দর্শনার্থীরা আমাদের এখানকার ঐতিহ্যবাহী পণ্য সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং এগুলো কিনে ব্যবহার করতে পারবেন। রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী পণ্যকে তুলে ধরতেই মেলার আয়োজন করা হয়েছে।’
মেলা ঘুরে দেখা যায়, ৩৫টি স্টলের অধিকাংশতেই রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী পণ্য পসরা সাজানো হয়েছে। একেবারে উত্তরপ্রান্তে বসানো হয়েছে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ নামের স্টল। যেখানে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিভিন্ন বই রাখা রয়েছে। মেলায় রয়েছে রাজশাহীর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের ব্যবহৃত ঐতিহ্যবাহী নানা পণ্যের একটি স্টল। নাম তার ‘নৃ-গোষ্ঠী’। রয়েছে হেরিটেজ ও লাইব্রেরি নামে স্টল। রাজশাহীর রেশম, রাজশাহীর সিল্ক, পিঠার দোকান, মৃৎশিল্প ও কাঠ শিল্প, চামড়ার নানা পণ্য নিয়ে ‘চামড়া শিল্প’ নামের স্টল। একপ্রান্তে রয়েছে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির বুথ। এখানে রক্ত সংগ্রহ চলছে। এ ছাড়াও রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী ‘ঢোপকল’ও নিদর্শন হিসেবে মেলায় রাখা হয়েছে।
এদিকে সাংস্কৃতিক সম্মেলনে যোগ দিতে শুক্রবার বিকালে বিমানযোগে রাজশাহীতে পৌঁছেছেন ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের মন্ত্রী শ্রী রামপ্রসাদ পাল ও তার স্ত্রী এবং অন্যান্য ভারতীয়। হযরত শাহ মখদুম বিমানবন্দরে তাদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। শুক্রবার দুপুর আড়াইটার পর ভারতের ৩১ সদস্যের প্রতিনিধি দল চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পৌঁছলে ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। পরে তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সোনামসজিদে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে অতিথিবৃন্দ চাঁপাইনবাবগঞ্জে পর্যটন মোটেলে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। সেখানে স্থানীয় গম্ভীরা প্রদর্শন করা হয়। পরে অতিথিরা রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা হন। ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই মিলনমেলা ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।